পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রজাপতির নির্বন্ধ Rఆ(t চন্দ্র। বিলম্ব তো হবেই, কাজটি তো সহজ নয়। কেবল তাই নয়— মামাদের কিছু কিছু আইন অধ্যয়নও দরকার। অবিচার-অত্যাচার থেকে রক্ষা করা, এবং কার কতদূর অধিকার সেটা চাষাভূযোদের বুঝিয়ে দেওয়া আমাদের কাজ। । ঐশ। চন্দ্রবাবু, বস্থন— চন্দ্র। না শ্ৰীশবাবু, বসতে পারছি নে, আমার একটু কাজ আছে। আর-একটি আমাদের করতে হচ্ছে— গোরুর গাড়ি, টেকি, তাত প্রভৃতি আমাদের দেশী অত্যাবশ্বক জিনিসগুলিকে একটু-আধটু সংশোধন করে যাতে কোনো অংশে তাদের সন্তা বা মজবুত বা বেশি উপযোগী করে তুলতে পারি সে চেষ্টা আমাদের করতে হবে। এবারে গরমির ছুটিতে কেদারবাবুদের কারখানায় গিয়ে প্রত্যহ আমাদের কতকগুলি পরীক্ষা করা চাই । শ্ৰীশ। চন্দ্রবাবু, অনেকক্ষণ দাড়িয়ে আছেন— [ চৌকি অগ্রসর-করণ চন্দ্র। না, না, আমি এখনি যাচ্ছি। দেখো আমার মত এই যে, এই-সমস্ত গ্রামের ব্যবহার্য সামান্ত জিনিসগুলির যদি আমরা কোনো উন্নতি করতে পারি তা হলে তাতে করে চাষীদের মনের মধ্যে যে-রকম আন্দোলন হবে, বড়ো বড়ো সংস্কারকার্যেও তেমন হবে না। তাদের সেই চিরকেলে টেকি-ঘানির কিছু পরিবর্তন করতে পারলে তবে তাদের সমস্ত মন সজাগ হয়ে উঠবে, পৃথিবী ষে এক জায়গায় দাড়িয়ে নেই এ তারা বুঝতে পারবে— শ্ৰীশ । চন্দ্রবাবু, বসবেন না কী ? চন্দ্র । থাক না। এক বার ভেবে দেখে, আমরা যে এতকাল ধরে শিক্ষা পেয়ে আসছি, উচিত ছিল আমাদের টেকি-কুলো থেকে তার পরিচয় আরম্ভ হওয়া। বড়ো বড়ো কলকারখানা তো দূরের কথা, ঘরের মধ্যেই আমাদের সজাগ দৃষ্টি পড়ল না। আমাদের হাতের কাছে যা আছে আমরা না তার দিকে ভালো করে চেয়ে দেখলুম, ন। তার সম্বন্ধে কিছুমাত্র চিন্তা করলুম। যা ছিল তা তেমনিই রয়ে গেছে। মানুষ অগ্রসর হচ্ছে অথচ তার জিনিসপত্র পিছিয়ে থাকছে, এ কখনো হতেই পারে না। আমরা পড়েই আছি— ইংরেজ আমাদের কাধে করে বহন করছে, তাকে এগোনে