পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলা مابbج শ্ৰীশ । কিন্তু অবলাকাস্তবাবু সম্বন্ধে একটা সন্দেহ থেকে যায়। তখন শৈল অদূরবর্তী টিপাই হইতে মিষ্টারের থালা জানিতে প্রস্থান করিল। চন্দ্র। দেখুন রসিকবাৰু, ভাষাতত্বে দেখা যায়, ব্যবহার করতে করতে একটা শব্দের মূল অর্থ লোপ পেয়ে বিপরীত অর্থ ঘটে থাকে। স্ত্রীসভ্য গ্রহণ করলে চিরকুমার-সভার অর্থের যদি পরিবর্তন ঘটে তাতে ক্ষতি কী ? রসিক। কিছু না। আমি পরিবর্তনের বিরোধী নই– তা নাম-পরিবর্তন বা বেশ-পরিবর্তন বা অর্থ-পরিবর্তন যাই হোক-না কেন, যখন যা ঘটে আমি বিনা বিরোধে গ্রহণ করি বলেই আমার প্রাণটা নবীন আছে। মিষ্টান্ন শেষ হইল এবং স্ত্রীসভ্য লওয়া সম্বন্ধে কাহারও আপত্তি হইল না। আহার-অবসানে রসিক কহিল, “আশা করি সভার কাজের কোনো ব্যাঘাত হয় নি।” ঐশ কহিল, “কিছু না— অন্তদিন কেবল মুখেরই কাজ চলত, আজ দক্ষিণ হস্তও যোগ দিয়েছে।” বিপিন। তাতে আভ্যস্তরিক তৃপ্তিটা কিছু বেশি হয়েছে। শুনিয়া শৈল খুশি হইয়া তাহার স্বাভাবিক স্নিগ্ধকোমল হাস্তে সকলকে পুরস্কৃত করিল। নবম পরিচ্ছেদ অক্ষয়। হল কী বল দেখি ! আমার ষে ঘরটি এতকাল কেবল ঝড়, বেহারার ঝাড়নের তাড়নে নির্মল ছিল, সেই ঘরের হাওয়া দু-বেলা তোমাদের দুই বোনের অঞ্চলবীজনে চঞ্চল হয়ে উঠছে যে ! নীরবালা। দিদি নেই, তুমি একলা পড়ে আছ বলে দয়া করে মাঝে মাঝে দেখা দিয়ে যাই, তার উপরে আবার জবাবদিহি ? অক্ষয় । গান । ভৈরবী । ওগো দয়াময়ী চোর, এত দয়া মনে তোর ! বড়ো দয়া করে কণ্ঠে আমার জড়াও মায়ার ডোর ! বড়ো দয়া করে চুরি করে লও শূন্ত হৃদয় মোর ! নীরবালা। মশায়, এখন সিদ্ধ কাটার পরিশ্রম মিথ্যে ; আমাদের এমন বোকী চোর পাও নি! এখন হৃদয় আছে কোথায় যে চুরি করতে আসব ?