পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२ॐ२ f রবীন্দ্র-রচনাবলী অক্ষয়। তোমরা কাছাকাছি থাকলে মনটা এইখানেই মারা যায়, দূরে যিনি আছেন সে পর্যন্ত আর পৌছয় না। না, ঠাট্ট নয়, পালাও । এখনি লোক আসবে— ওই একটি বই দরজা খোলা নেই, তখন পালাবার পথ পাবে না । নৃপবালা । এই সন্ধেবেলায় কে তোমার কাছে আসবে ? অক্ষয় । যাদের ধ্যান কর তারা নয় গো, তারা নয় । নীরবালা। যার ধ্যান করা যায় সে সকল সময় আসে না, তুমি আজকাল সেটা বেশ বুঝতে পারছ, কী বল মুখুজোমশায়। দেবতার ধ্যান কর আর উপদেবতার উপদ্রব হয় । “অবলাকাস্তবাবু আছেন ?” বলিয়া ঘরের মধ্যে সহসা ঐশের প্রবেশ। “মাপ করবেন” বলিয়া পলায়নোস্তম । নৃপ ও নীরর সবেগে প্রস্থান । অক্ষয়। এস এস শ্ৰীশবাবু! ঐশ । ( সলজভাবে ) মাপ করবেন। অক্ষয়। রাজি আছি, কিন্তু অপরাধটা কী আগে বলে । ঐশ । খবর না দিয়েই— অক্ষয়। তোমার অভ্যর্থনার জন্ত মুনিসিপ্যালিটির কাছ থেকে যখন বাজেট স্তাংশন করে নিতে হয় না তখন নাহয় খবর না দিয়েই এলে ঐশবাৰু! ঐশ। আপনি যদি বলেন, এখানে আমার অসময়ে অনধিকার প্রবেশ হয় নি তা হলেই হল। অক্ষয়। তাই বললেম । তুমি যখনি আসবে তখনি মুসময়, এবং যেখানে পদার্পণ করবে সেইখানেই তোমার অধিকার—শ্ৰীশবাবু, স্বয়ংবিধাতা সর্বত্র তোমাকে পাসপোর্ট, দিয়ে রেখেছেন। একটু বোসো, অবলাকাস্তবাবুকে খবর পাঠিয়ে দিই। (স্বগত) না পলায়ন করলে চিঠি শেষ করতে পারব না। [ প্রস্থান শ্ৰীশ । চক্ষের সম্মুখ দিয়ে একজোড়া মায়া-স্বর্ণমৃগী ছুটে পালালে, ওরে নিরস্ত্র ব্যাধ, তোর ছোটবার ক্ষমতা নেই! নিকষের উপর সোনার রেখার মতো চকিত চোখের চাহনি দৃষ্টিপথের উপরে যেন আঁকা রয়ে গেল ! রসিকের প্রবেশ ঐশ। সন্ধেবেলায় এসে আপনাদের তো বিরক্ত করি নি রসিকবাৰু? রসিক। ভিক্ষকক্ষে বিনিক্ষিপ্ত: কিষিস্থানীয়সে তবেং? ঐশবাৰু, আপনাকে দেখে বিরক্ত হব আমি কি এতবড়ো হতভাগ্য !