পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রজাপতির নির্বন্ধ دةج রসিক। মুখখান প্রসন্ন করুন বিপিনবাৰু! আমাদের প্রতি ঈর্ষা করবেন না। আমি তো বৃক্ষ, যুবকের ঈর্ষার যোগ্যই নই। আর জামাদের স্বকুমারমূর্তি অবলাকান্তবাবুকে কোনো স্ত্রীলোক পুরুষ বলে জ্ঞানই করে না। আপনাকে দেখে যদি কোনো স্বন্দরী কিশোরী ত্রস্তহরিণীর মতো পলায়ন করে থাকেন তা হলে মনকে এই বলে সাম্বন দেবেন যে, তিনি আপনাকে পুরুষ বলেই মস্ত খাতিরটা করেছেন। হায় রে হতভাগ্য রসিক, তোকে দেখে কোনো তরুণী লজ্জাতে পলায়নও করে না ! বিপিন। রসিকবাৰু আপনাকেও যে দলে টানছেন অবলাকাস্তবাবু এ কিরকম হল ? শৈল। কী জানি বিপিনবাৰু, আমার এই অবলাকান্ত নামটাই মিথ্যে— কোনো অবলা তো এপর্যস্ত আমাকে কান্ত বলে বরণ করে নি । বিপিন। হতাশ হবেন না, এখনো সময় আছে। শৈল। সে অাশা এবং সে সময় যদি থাকত তা হলে চিরকুমার-সভায় নাম লেখাতে বেতুম না। বিপিন। (স্বগত) এর মনের মধ্যে একটা কী বেদন রয়েছে, নইলে এত অল্প বয়সে এই কাচামুখে এমন স্নিগ্ধ কোমল করুণভাব থাকত না – এটা কিসের খাতা ? গান লেখা দেখছি। নীরবালা দেবী ! [ পাঠ শৈল। কী পড়ছেন বিপিনবাৰু ? বিপিন । কোনো একটি অপরিচিতার কাছে অপরাধ করছি, হয়তো তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবার স্থযোগ পাব না, এবং হয়তো তার কাছে শাস্তি পাবারও সৌভাগ্য হবে না, কিন্তু এই গানগুলি মানিক এবং হাতের অক্ষরগুলি মুক্তো ! যদি লোভে পড়ে চুরি করি তবে দণ্ডদাতা বিধাত ক্ষমা করবেন। শৈল। বিধাতা মাপ করতে পারেন, কিন্তু আমি করব না। ও খাতাটির পরে আমার লোভ আছে বিপিনবাবু! রসিক। জার, আমি বুঝি লোভ মোহ সমস্ত জয় করে বসে আছি? জাহা, হাতের অক্ষরের মতো জিনিস আর অাছে ? মনের ভাব মূর্তি ধরে আঙুলের আগা দিয়ে বেরিয়ে জালে— অক্ষরগুলির উপর চোখ বুলিয়ে গেলে, হৃদয়টি যেন চোখে এসে লাগে ! অবলাকভি, এ খাতাখানি ছেড়ে না ভাই ! তোমাদের চঞ্চল নীরবাল দেবী কৌতুকের ঝরনার মতো দিনরাত ঝরে পড়ছে, তাকে তো ধরে রাখতে পার না, এই খাতাখানির পত্রপুটে তারই একটি গণ্ডুৰ ভরে উঠেছে—এ জিনিসের নাম 8լ Գ ծ