WՉo Եր রবীন্দ্র-রচনাবলী বিপিন। ওটা পুনর্বার চালাবার জন্তে চিরকুমার-সভায় একটা প্রস্তাব এনে দেখে-না ! ঐশ। কতকগুলো জিনিস আছে যার আইডিয়াটা এত সুন্দর ষে, সংসারে সেটা চালাতে সাহস হয় না। ষে রাস্তায় অভিসার হতে পারে, যেখানে কামিনীদের হার থেকে মুক্তে ছিড়ে ছড়িয়ে পড়ে, সে রাস্তা কি তোমার পটোলডাঙ। স্ট্রট ? সে রাস্ত জগতে কোথাও নেই। বিরহিণীর হৃদয় নীলাম্বরী পরে মনোরাজ্যের পথে ওই রকম করে বেরিয়ে থাকে— বক্ষের উপর থেকে মুক্তে ছিড়ে পড়ে, চেয়েও দেখে না— সত্যিকার মুক্তে হলে কুড়িয়ে নিত। কী বলেন রসিকবাৰু ? রসিক। সে কথা মানতেই হয়— অভিসারটা মনে মনেই ভালো, গাড়ি-ঘোড়ার রাস্তায় অত্যন্ত বেমানান। আশীৰ্বাদ করি শ্ৰীশবাবু, এইরকম বসন্তের জ্যোংস্কারাত্রে কোনো একটি জানলা থেকে কোনো এক রমণীর ব্যাকুল হৃদয় তোমার বাসার দিকে যেন অভিসারে যাত্রা করে। শ্ৰীশ । তা করবে রসিকবাবু, আপনার আশীৰ্বাদ ফলবে। আজকের হাওয়াতে সেই খবরটা আমি মনে মনে পাচ্ছি। বিশে ডাকাত যেমন খবর দিয়ে ডাকাতি করত, আমার অজানা অভিসারিক তেমনি পূর্বে হতেই আমাকে অভিসারের খবর পাঠিয়েছে। বিপিন। তোমার সেই ছাতের বারান্দাটা সাজিয়ে প্রস্তুত হয়ে থেকে । শ্ৰীশ। তা, আমার সেই দক্ষিণের বারান্দায় একটি চৌকিতে আমি বসি, আরএকটি চৌকি সাজানো থাকে। বিপিন । সেটাতে আমি এসে বসি । ঐশ। মধ্বভাবে গুড়ং দদ্যাৎ, অভাবপক্ষে তোমাকে নিয়ে চলে । বিপিন। মধুময়ী যখন আসবেন তখন হতভাগার ভাগ্যে লগুড়ং দস্তাং । রসিক। ( জনাস্তিকে ) শ্ৰীশবাৰু, আপনার সেই দক্ষিণের ছাতটিকে চিহ্নিত করে রাখবার জন্যে যে পতাকা ওড়ানো আবশুক সেটা যে ফেলে এলেন ! শ্ৰীশ । রুমালটা কি এখন চেষ্টা করলে পাওয়া যেতে পারবে ? রসিক। চেষ্টা করতে দোষ কী ? ঐশ। বিপিন, তুমি ভাই রসিকবাবুর সঙ্গে একটু কথাবার্তা কও, আমি চট্ করে আসছি । [ প্রস্থান বিপিন। আচ্ছা রসিকবাৰু, রাগ করবেন না— রসিক। যদি বা করি, আপনার ভয় করবার কোনো কারণ নেই– আমি । ভারি দুর্বল।
পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৩০
অবয়ব