পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\O88 রবীন্দ্র-রচনাবলী উদ্দেশ্বের প্রতি এক মুহূর্তের জন্য ভক্তির অভাব হয় নাই, কিন্তু মাঝে মাঝে শক্তির দৈন্ত অনুভব করিয়া থাকি তাহা শ্রীচরণ-সমীপে সবিনয়ে স্বীকার করিতেছি।’ নির্মলা । আমার বোধ হয়, সকল বড়ো কাজেই মানুষ মাঝে মাঝে আপনার অক্ষমতা অকুভব করে হতাশ হয়ে পড়ে, শ্রাস্ত মন এক-এক বার বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়— কিন্তু সে কি বরাবর থাকে ? চন্দ্র। সভা হইতে গৃহে ফিরিয়া আসিয়া যখন কার্ধে হাত দিতে যাই তখন সহসা নিজেকে একক মনে হয়, উৎসাহ যেন আশ্রয়হীন লতার মতে লুষ্ঠিত হইয়া পড়িতে চাহে।’ নির্মল, আমরা তো ঠিক এই কথাই বলছিলেম। নির্মলা। পূর্ণবাৰু যা লিখেছেন সেটা সত্য, মানুষের সঙ্গ না হলে কেবলমাত্র সংকল্প নিয়ে উৎসাহ জাগিয়ে রাখা শক্ত । চন্দ্র । “আমার ধৃষ্টতা মার্জনা করিবেন, কিন্তু অনেক চিন্তা করিয়া এ কথা স্থির বুঝিয়াছি, কুমারত্ৰত সাধারণ লোকের জন্য নহে – তাহাতে বল দান করে না, বল হরণ করে। স্ত্রী পুরুষ পরস্পরের দক্ষিণ হস্ত— তাহার মিলিত থাকিলে তবেই সম্পূর্ণরূপে সংসারের সকল কাজের উপযোগী হইতে পারে।’ তোমার কী মনে হয় নির্মল ? (নির্মলা নিরুত্তর ) অক্ষয়বাবুও এই কথা নিয়ে সেদিন আমার সঙ্গে তর্ক করছিলেন, তার অনেক কথার উত্তর দিতে পারি নি । নির্মলা । তা হতে পারে। বোধ হয় কথাটার মধ্যে অনেকটা সত্য আছে। চন্দ্র। 'গৃহস্থসস্তানকে সন্ন্যাসধর্মে দীক্ষিত না করিয়া গৃহাশ্রমকে উন্নত গঠিত করাই আমার মতে শ্রেষ্ঠ কর্তব্য।’ ! নির্মলা। এ কথাটা কিন্তু পূৰ্ণবাৰু বেশ বলেছেন। চন্দ্র। আমিও কিছুদিন থেকে মনে করছিলেম কুমারত্ৰত গ্রহণের নিয়ম উঠিয়ে দেব | l নির্মলা । আমারও বোধ হয় উঠিয়ে দিলে মন্দ হয় না, কী বল মামা ? অস্ত কেউ কি আপত্তি করবেন? অবলাকাস্তবাবু, শ্ৰীশবাবু— চন্দ্র। আপত্তির কোনো কারণ নেই। নির্মলা। তবু একবার অবলাকাস্তবাবুদের মত নিয়ে দেখা উচিত। চন্দ্র । মত তো নিতেই হবে। (পত্রপাঠ ) 'এপর্যন্ত যাহা লিখিলাম সহজে লিখিয়াছি, এখন যাহা বলিতে চাহি তাহ লিখিতে কলম সরিতেছে না।’ নিৰ্মলা। মাম, পূর্ণবাৰু হয়তে কোনো গোপনীয় কথা লিখছেন, তুমি চেচিয়ে পড়ছ কেন ? t 寧 t