ভারতবর্ষ । ©ዓቕ» বসাইতে আমাদের মনে দ্বিধামাত্র হয় না— ভারতবর্ষের আগৌরবে আমাদের প্রাণান্তকর লজাবোধ হইতে পারে না। আমরা জনায়াসেই বলিয়া থাকি, পূর্বে আমাদের কিছুই ছিল না, এবং এখন আমাদিগকে অশনবসন আচারব্যবহার সমস্তই বিদেশীর কাছ হইতে ভিক্ষা করিয়া লইতে হইবে । , ... যে-সকল দেশ ভাগ্যবান তাহারা চিরন্তন স্বদেশকে দেশের ইতিহাসের মধ্যেই খুজিয়া পায়, বালককালে ইতিহাসই দেশের সহিত তাহাদের পরিচয়সাধন করাইয়া দেয়। আমাদের ঠিক তাহার উলটা। দেশের ইতিহাসই আমাদের স্বদেশকে আচ্ছন্ন করিয়া রাখিয়াছে। মামুদের আক্রমণ হইতে লর্ড, কার্জনের সাম্রাজ্যগর্বোদগারকাল পর্যন্ত ষে-কিছু ইতিহাসকথা তাহা ভারতবর্ষের পক্ষে বিচিত্র কুহেলিকা ; তাহ স্বদেশ সম্বন্ধে আমাদের দৃষ্টির সহায়তা করে না, দৃষ্টি আবৃত করে মাত্র। তাহা এমন স্থানে কৃত্রিম আলোক ফেলে, ষাহাতে আমাদের দেশের দিকটাই আমাদের চোখে অন্ধকার হইয়া যায়। সেই অন্ধকারের মধ্যে নবাবের বিলাসশালার দীপালোকে নর্তকীর মণিভূষণ জলিয়া উঠে, বাদশাহের স্বরাপাত্রের রক্তিম ফেনোচ্ছাস উন্মত্ততার জাগররক্ত দীপ্তনেত্রের স্তায় দেখা দেয় ; সেই অন্ধকারে আমাদের প্রাচীন দেবমন্দিরসকল মস্তক আবৃত করে এবং স্বলতান-প্রেয়সীদের শ্বেতমর্মররচিত কারুখচিত কবরচুড়া নক্ষত্ৰলোক চুম্বন করিতে উষ্ঠত হয়। সেই অন্ধকারের মধ্যে অশ্বের ক্ষুরধ্বনি, হস্তীর বৃংহিত, অস্ত্রের বাঞ্চনা, স্থদুরব্যাপী শিবিরের তরঙ্গিত পাণ্ডুরতা, কিংখাব-আন্তরণের স্বর্ণচ্ছটা, মসজিদের ফেনবুদবুদাকার পাষাণমওপ, খোজাপ্রহরিরক্ষিত প্রাসাদ-অন্তঃপুরে রহস্তনিকেতনের নিন্তব্ধ মৌন— এ-সমস্তই বিচিত্র শব্দে ও বর্ণে ও ভাবে ষে প্রকাও ইন্দ্ৰজাল রচনা করে তাহাকে ভারতবর্ষের ইতিহাস বলিয়া লাভ কী ? তাহ। ভারতবর্ষের পুণ্যমন্ত্রের পুথিটিকে একটি অপরূপ আরব্য উপন্যাস দিয়া মুড়িয়া রাখিয়াছে— সেই পুথিখানি কেহ খোলে না, সেই আরব্য উপস্তাসেরই প্রত্যেক ছত্র ছেলেরা মুখস্থ করিয়া লয়। তাহার পরে প্রলয়রাত্রে এই ৰোগলসাম্রাজ্য যখন মুমূর্ব, তখন শ্মশানস্থলে দূরাগত গৃধ্ৰগণের পরম্পরের মধ্যে বে-সকল চাতুরী প্রবঞ্চনা হানাহানি পড়িয়া গেল, তাহাও কি ভারতবর্ষের ইতিবৃত্ত ? এবং তাহার পর হইতে পাচ পাঁচ বৎসরে বিভক্ত ছক-কাট শতরঞ্চের মতো ইংরাজশাসন, ইহার মধ্যে ভারতবর্ব জারে ক্ষুত্র ; বন্ধত শতরঞ্চের সহিত ইহার প্রভেদ এই ষে, ইহার ঘরগুলি কালোয় সাদায় সমান বিভক্ত নহে, ইহার পনেরোজানাই সাদা। আমরা ՅկՀ*
