পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Oye রবীন্দ্র-রচনাবলী লেছ্‌লর দোকান হইতে কিনিয়া লইতেছি— জার-সমস্ত দোকানপাট বন্ধ। এ কারখানাটির বিচার হইতে বাণিজ্য পর্যন্ত সমস্তই স্ব হইতে পারে, কিন্তু ইহার মধ্যে কেরানিশালার এক কোণে আমাদের ভারতবর্ষের স্থান অতি যৎসামান্ত । ইতিহাস সকল দেশে সমান হইবেই, এ কুসংস্কার বর্জন না করিলে নয়। যে ব্যক্তি র চাইলডের জীবনী পড়িয়া পাকিয়া গেছে, সে ঐস্টের জীবনীর বেলায় তাহার হিসাবের খাতাপত্র ও আপিসের ডায়ারি তলব করিতে পারে ; যদি সংগ্ৰহ করিতে না পারে তবে তাহার অবজ্ঞা জন্মিবে এবং সে বলিবে, যাহার এক পয়সার সংগতি ছিল না তাহার আবার জীবনী কিসের ? তেমনি ভারতবর্ষের রাষ্ট্ৰীয় দফতর হইতে তাহার রাজবংশমালা ও জয়পরাজয়ের কাগজপত্র না পাইলে যাহার ভারতবর্ষের ইতিহাস সম্বন্ধে হতাশ্বাস হইয়া পড়েন এবং বলেন যেখানে পলিটিক্স নাই সেখানে আবার হিষ্ট্রি কিসের’, তাহারা ধানের খেতে বেগুন খুজিতে যান এবং না পাইলে মনের ক্ষোভে ধানকে শস্তের মধ্যেই গণ্য করেন না। সকল খেতের আবাদ এক নহে, ইহা জানিয়া যে ব্যক্তি যথাস্থানে উপযুক্ত শস্তের প্রত্যাশা করে সেই প্রাজ্ঞ । যিশুখ্ৰীস্টের হিসাবের খাতা দেখিলে তাহার প্রতি অবজ্ঞা জন্মিতে পারে, কিন্তু র্তাহার অন্ত বিষয় সন্ধান করিলে খাতাপত্র সমস্ত নগণ্য হইয়া যায়। তেমনি রাষ্ট্ৰীয় ব্যাপারে ভারতবর্ষকে দীন বলিয়া জানিয়াও অন্ত বিশেষ দিক হইতে সে দীনতাকে তুচ্ছ করিতে পারা যায়। ভারতবর্ষের সেই নিজের দিক হইতে ভারতবর্ধকে না দেখিয়া আমরা শিশুকাল হইতে তাহাকে খর্ব করিতেছি ও নিজে খর্ব হইতেছি । ইংরাজের ছেলে জানে, তাহার বাপ-পিতামহ জনেক যুদ্ধজয় দেশ-অধিকার ও বাণিজ্যব্যবসায় করিয়াছে ; সেও নিজেকে রণগৌরব ধনগৌরব রাজ্যগৌরবের অধিকারী করিতে চায় । আমরা জানি, আমাদের পিতামহগণ দেশ-অধিকার ও বাণিজ্যবিস্তার করেন নাই— এইটে জানাইবার জন্তই ভারতবর্ষের ইতিহাস । তাহার কী করিয়াছিলেন জানি না, সুতরাং আমরা কী করিব তাহাও জানি না। স্বতন্ত্রাং পরের নকল করিতে হয়। ইহার জন্ত কাহাকে দোষ দিব ? ছেলেবেলা হইতে আমরা যে প্রণালীতে যে শিক্ষা পাই তাহাতে প্রতিদিন দেশের সহিত আমাদের বিচ্ছেদ ঘটিয়া ক্ৰমে দেশের বিরুদ্ধে আমাদের বিদ্রোহতাব জন্মে । আমাদের দেশের শিক্ষিত লোকেরাও ক্ষণে क्रन श्उनूबि ভায় বলিয় উঠেন, দেশ তুমি কাহাকে বল, আমাদের দেশের বিশেষ ভাবটা কী, তাহ কোথায় আছে, তাহা কোথায় ছিল ? প্রশ্ন করিয়৷ ইহার উত্তর পাওয়৷ ৰায় না। কারণ, কখাটী