পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& ety রবীন্দ্র-রচনাবলী তাহার অল্প। অত্যাকাঙ্ক্ষার তাড়ন এবং অভাবের আশঙ্কা হইতে মুক্ত হইয়া, জীবনযাত্রার উপকরণ -উপার্জনের অবিশ্রাম চেষ্টা ছাড়িয়া, জীবনযাত্রার জন্যই সে জবসর লাভ করে। প্রকৃতির দানসকল উপভোগ করিতে, শিষ্টতার চর্চা করিতে এবং মাকুষের সঙ্গে সহৃদয় নিঃস্বার্থ সম্বন্ধ পাতাইয়া বসিতে তাহার ভিতরের স্বভাব এবং বাহিরের স্বযোগ দুইই অমুকুল। ইহার ফল হইয়াছে এই যে, ধর্মের দিকেই বল, আর মাধুর্ষের দিকেই বল, তোমাদের যুরোপের অধিকাংশ অধিবাসীর চেয়ে আমাদের লোকেরা শ্রেষ্ঠতা লাভ করিয়াছে। তোমাদের কার্যকরী এবং বৈজ্ঞানিক সফলতার মহত্ব আমরা স্বীকার করি ; কিন্তু স্বীকার করিয়াও, তোমাদের ষে সভ্যতা হইতে বড়ো বড়ো শহরে এমন রূঢ় আচার, এমন অবনত ধর্মনীতি এবং বাহশোভনতার এমন বিকার উৎপন্ন হইয়াছে, সে সভ্যতাকে আমরা সমস্ত মন দিয়া প্রশংসা করা অসম্ভব দেখি। তোমরা যাহাকে উন্নতিশীল জাত বল আমরা তাহী নই এ কথা মানিতে রাজি আছি, কিন্তু ইহাও দেখিতেছি, উন্নতির মূল্য সর্বনেশে হইতে পারে। তোমাদের আর্থিক লাভের চেয়ে আমাদের ধর্মনৈতিক লাভকেই আমরা শিরোধার্য করি, এবং তোমাদের সেই সম্পদ হইতে যদি বঞ্চিত হইতে হয় সেও স্বীকার, তৰু আমাদের যে-সকল আচারঅনুষ্ঠান আমাদের ধর্মলাভকে স্বনিশ্চিত করিয়াছে তাহাকে আমরা শেষ পর্যন্ত জাকড়িয়া ধরিবার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।" # এই গেল প্রথম পত্র। দ্বিতীয় পত্রে লেখক অর্থনৈতিক অবস্থা সম্বন্ধে আলোচনা করিয়াছেন। তিনি বলেন— ‘আমাদের যাহা দরকার তাঁহাই আমরা উৎপন্ন করি, আমরা যাহা উৎপন্ন করি তাহ জামরাই খাই। জন্য জাতের উৎপন্ন দ্রব্য আমরা চাহি নাই, আমাদের দরকারও হয় নাই। আমাদের মতে সমাজের স্থিতি রক্ষা করিতে হইলে, তাহার আর্থিক স্বাধীনত থাক চাই। বৃহৎ বিদেশী বাণিজ্য সামাজিক ভ্ৰষ্টতার একটা নিশ্চিত কারণ। ‘তোমরা যাহা খাইতে চাও তাহ তোমরা উৎপন্ন করিতে পার না, তোমাদিগকে যাহ উৎপন্ন করিতে হয় তাহ তোমরা কুরাইতে পায় না। প্রাণের দায়ে এমনতরে কেনাবেচার গঞ্জ তোমাদের দরকার যেখানে তোমাদের কারখানার মাল চালাইতে পার এবং খাস্ত এবং কৃষিজাত আৰ্য কিনিতে পার। অতএব যেমন করিয়া হউক, চীনকে তোমাদের দরকার। I . . . ‘তোমরা চাও জামরাও ব্যাবসাদার হই এবং জামাদের রাষ্ট্রীয় ও আর্থিক যে