পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8>२ রবীন্দ্র-রচনাবলী পরিবারতন্ত্র যাহা পোলিটিক্যাল সামাজিক ও আর্থিক ব্যাপারে এক-একটি ক্ষুত্র রাজ্যবিশেষ, তাহারা আমাদিগকে গবর্মেন্ট-শাসন হইতে এতটা দূর মুক্তিস্থান করিয়াছে ষে যুরোপের পক্ষে তা বিশ্বাস করাই কঠিন। “আমাদের সমাজের গোড়াকার জিনিসগুলি কোনো রাজক্ষমতার স্বেচ্ছাকৃত স্বজন নহে । আমাদের জনসাধারণ নিজের জীবনকে এইরূপ শরীরতন্ত্রের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছে। কোনো গবর্মেন্ট, তাহাকে গড়ে নাই, কোনো গবর্মেন্ট, তাহার বদল করিতে পারে না। এক কথায় আইন জিনিসটা উপর হইতে আমাদের মাথায় চাপানো হয় নাই— তাহা আমাদের জাতিগত জীবনের মূলস্থত্র, এবং যাহা শাস্ত্রে লিপিবদ্ধ আছে তাহাই ব্যবহারে প্রবর্তিত হইয়াছে। এইজন্ত চীনে গবর্মেন্ট, যথেচ্ছাচারী নহে, অত্যাবগুকও নয়। রাজপুরুষদের শাসন তুলিয়া লও, তৰু আমাদের জীর্ণনষাত্রা প্রায় পূর্বের মতোই চলিয়া যাইবে। ষে আইন আমরা মান্ত করি সে আমাদের স্বভাবের আইন, বহু শতাব্দীর অভিজ্ঞতায় তাহ অভিব্যক্ত হইয়া উঠিয়াছে —বাহিরের শাসন তুলিয়া লইলেও ইহার কাছে আমরা বখত। স্বীকার করি। বাহাই ঘটুক-না, আমাদের পরিবার থাকে, পরিবারের সঙ্গে সঙ্গে মনের সেই গঠনটি থাকে, সেই শৃঙ্খলা কর্মনিষ্ঠত ও মিতব্যয়িতার ভাবটি থাকিয়া যায়। ইহারাই চীনকে তৈরি করিয়াছে। তোমাদের পশ্চিমদেশে গবর্মেন্ট ব্যাপারটা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। এখানে কোনো মূলবিধান নাই, কিন্তু ইচ্ছাকৃত অন্তহীন আইন পড়িয়া আছে। মাটি হইতে কিছুই গজাইয়া উঠে না, উপর হইতে সমস্ত পুতিয়া দিতে হয়। বাহাকে একবার পোতা হয় তাহাকে আবার পোতা দরকার হয় । গত শত বৎসরের মধ্যে তোমরা তোমাদের সমস্ত সমাজকে উলটাইয়া দিয়াছ। সম্পত্তি, বিবাহ, ধর্ম, চরিত্র, শ্রেণীবিভাগ, পদ্ধবিভাগ, অর্থাৎ মানবসম্বন্ধগুলির মধ্যে যাহা-কিছু সব চেয়ে উদার ও গভীর, তাহাদিগকে একেবারে শিকড়ে ধরিয়া উপড়াইয়া কালের স্রোতে আবর্জনার মতো ভাসাইয়া দেওয়া হইয়াছে। এইজন্তই তোমাদের গবর্মেন্ট কে এত বেশি উদ্যম প্রকাশ করিতে হয়— কারণ, গবর্মেন্ট, নহিলে কে তোমাদের সমাজকে ধারণ করিয়া রাখিবে ? তোমাদের পক্ষে গবর্মেন্ট, যত একান্ত আবগুক, সৌভাগ্যক্রমে আমাদের পূৰ্বদেশের পক্ষে তত নয়। আমার কাছে এটা একটা অমঙ্গল ৰলিয়াই বোধ হয় ; কিন্তু দেখিতেছি, ইহ নহিলেও তোমাদের চলিবার উপায় নাই। তবু এত বড়ে কাজটা বাহকে দিয়া জাৰায় করিতে চাও, সেই বন্ধটার অসামান্ত অপটুতা দেখিয়া জামি জারও স্বাক্ষৰ হই । ৰোগ্য লোক -নিৰ্বাচনের স্বনিশ্চিত উপায় জাৰিকল্পি বা