8XE8 রবীন্দ্র-রচনাবলী করে, সমাজে অলুব্ধ ও সত্যপরায়ণের অপেক্ষ তাহার পুণ্যের সম্মান কম নহে, বরঞ্চ বেশি। যে ব্যক্তি ধবনের অল্প খাইয়াছে আর ষে ব্যক্তি জাল মকজমায় যবনের অন্নের উপায় অপহরণ করিয়াছে, উভয়েই পাপীর কোঠায় পড়ায় প্রথমোক্ত পাপীর প্রতি ঘৃণা ও দণ্ড যেন মাত্রায় বাড়িয়ে উঠে। যুরোপে তেমনি মাহীত্ম্যের মধ্যে জাতিবিচার উঠিয়া গেছে। যে ব্যক্তি ক্রিকেটখেলায় শ্রেষ্ঠ, ষে অভিনয়ে শ্রেষ্ঠ, ষে দানে শ্রেষ্ঠ, যে সাধুতায় শ্রেষ্ঠ, সকলেই গ্রেটম্যান। একই-জাতীয় সম্মানস্বর্গে সকলেরই সদগতি। ইহাতে ক্রমেই যেন ক্ষমতার অৰ্ঘ্য মাহীত্ম্যের অপেক্ষা বেশি দাড়াইয়াছে। দলের হাতে বিচারের ভার থাকিলে এইরূপ ঘটাই অনিবার্য। যে আচারপরায়ণ সে ধর্মপরায়ণের সমান হইয়া দাড়ায়, এমন-কি, বেশি হইয়া ওঠে ; যে ক্ষমতাশালী সে মহাত্মাদের সমান, এমনকি, তাহদের চেয়ে বড়ো হইয়া দেখা দেয়। আমাদের সমাজে দলের লোকে যেমন আচারকে পূজা করিয়া ধর্মকে খর্ব করে, তেমনি যুরোপের সমাজে দলের লোকে ক্ষমতাকে পূজ্য করিয়া মাহাত্ম্যকে ছোটাে করিয়া ফেলে। যথার্থ ভক্তির উপর পূজার ভার না দিয়া লোকারণ্যের উপর পূজার ভার দিলে দেবপূজার ব্যাঘাত ঘটে। বারোয়ারির দেবতার যত ধুম গৃহদেবতা-ইষ্টদেবতার তত ধুম নহে। কিন্তু বারোয়ারির দেবতা কি মুখ্যত একটা অবাস্তর উত্তেজনার উপলক্ষ্যমাত্র নহে? ইহাতে ভক্তির চর্চা না হইয়া ভক্তির অবমাননা হয় না कि ? আমাদের দেশে আধুনিক কালের বারোয়ারির শোকের মধ্যে, বারোয়ারির স্বতিপালনচেষ্টার মধ্যে, গভীর শূন্তত দেখিয়া আমরা পদে পদে ক্ষুব্ধ হই। নিজের দেবতাকে কোন প্রাণে এমন কৃত্রিম সভায় উপস্থিত করিয়া পূজার অভিনয় কর হয় বুঝিতে পারি না। সেই অভিনয়ের আয়োজনে যদি মাল-মসলা কিছু কম হয় তবে আমরা পরস্পরকে লজ্জা দিই, কিন্তু লজ্জার বিষয় গোড়াতেই। যিনি ভক্ত তিনি মহতের মাহাত্ম্য কীর্তন করিবেন ইহা স্বাভাবিক এবং সকলের পক্ষেই শুভফলপ্রদ, কিন্তু মহাত্মাকে লইয়া সকলে মিলিয়া এক দিন বারোয়ারির কোলাহল তুলিয়া কর্তব্যসমাধার চেষ্টা লজ্জাকর এবং নিফল । বিস্তাসাগর আমাদের সমাজে ভক্তিলাভ করেন নাই এ কথা কোনোমতেই বল । স্বায় না। র্তাহার প্রতি বাঙালিমাত্রেরই ভক্তি অকৃত্রিম । কিন্তু বাহারা বর্ষে বর্ষে বিদ্যাসাগরের স্মরণসভা আহবান করেন তাহারা বিদ্যাসাগরের স্থতিরক্ষার জন্ত সমুচিত, চেষ্টা হইতেছে না বলিয়া আক্ষেপ করিতে থাকেন। ইহাতে কি .এই
