বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Woo রবীন্দ্র-রচনাবলী সৌন্দর্যপ্রতিমা । তারি পদে মানী সঁপিয়াছে মান, ধনী সঁপিয়াছে ধন, বীর সপিয়াছে আত্মপ্রাণ তাহারি উদ্দেশে কবি বিরচিয়া লক্ষ লক্ষ গান ছড়াইছে দেশে দেশে। শুধু জানি তাহারি মহান গভীর মঙ্গলধ্বনি শুনা যায় সমূত্রে সমীরে, তাহারি অঞ্চলপ্রাস্ত লুটাইছে নীলাম্বর ঘিরে, তারি বিশ্ববিজয়িনী পরিপূর্ণ প্রেমমূর্তিখানি বিকাশে পরমক্ষণে প্রিয়জনমুখে। শুধু জানি সে বিশ্বপ্রিয়ার প্রেমে ক্ষুদ্রতারে দিয়া বলিদান বর্জিতে হইবে দূরে জীবনের সর্ব অসন্মান ; সম্মুখে দাড়াতে হবে উন্নত মস্তক উচ্চে তুলি ষে মস্তকে ভয় লেখে নাই লেখা, দাসত্বের ধূলি অঁাকে নাই কলঙ্কতিলক । তাহারে অস্তরে রাখি জীবনকণ্টকপথে যেতে হবে নীরবে একাকী, মুখে দুঃখে ধৈর্য ধরি, বিরলে মুছিয়া অশ্রু-আঁখি, প্রতিদিবসের কর্মে প্রতিদিন নিরলস থাকি, সুখী করি সর্বজনে। তার পরে দীর্যপথশেষে জীবযাত্র-অবসানে ক্লাস্তপদে রক্তসিক্ত বেশে উত্তরিব এক দিন শ্রাস্তিহর শাস্তির উদ্দেশে দুঃখহীন নিকেতনে। প্রসন্নবদনে মন্দ হেসে পরাবে মহিমালক্ষ্মী ভক্তকণ্ঠে বরমাল্যখানি, করপদ্মপরশনে শাস্ত হবে সর্ব দুঃখপ্পানি সর্ব অমঙ্গল। লুটাইয়া রক্তিম চরণতলে ধৌত করি দিব পদ আজন্মের রুদ্ধ অশ্রজলে। স্থচিরসঞ্চিত আশা সম্মুখে করিয়া উদ্‌ঘাটন জীবনের অক্ষমতা কাদিয়া করিব নিবেদন, মাগিব অনন্ত ক্ষম। হয়তো ঘুচিবে দুঃখনিশ, তৃপ্ত হবে এক প্রেমে জীবনের সর্বপ্ৰেমতৃব। রামপুর বোয়ালিয়া ২৩ ফাল্গুন, ১৩০০