পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Vro রবীন্দ্র-রচনাবলী উপনন্দ । তোমরা পারবে তো ভাই ? প্রথম বালক । খুব পারব। কেন পারব না ? ? উপনন্দ ৷ শ্ৰান্ত হবে না তো ? দ্বিতীয় বালক। ককখনো না। । উপনন্দ । খুব ধরে ধরে লিখতে হবে কিন্তু । প্রথম বালক । তা বুঝি পারি। নে !! আচ্ছা, তুমি দেখো উপনন্দ। ভুল থাকলে চুলবে না। ”单 দ্বিতীয় বালক । কিছু ভুল থাকবে না। প্রথম বালক । এ বেশ মজা হচ্ছে। পুঁথি শেষ করব তবে ছাড়ব । দ্বিতীয় বালক । নইলে ওঠা হবে না । তৃতীয় বালক । কী বলা ঠাকুর্দা, আজ লেখা শেষ করে দিয়ে তবে উপনন্দকে নিয়ে নীেকো-বাচ করতে যাব | বেশ মজা ! ঠাকুরদাদা । 5R সিন্ধু ভৈরবী। তেওরা আনন্দেরই সাগর থেকে এসেছে আজ বান দাঁড় ধরে আজ বোস রে সবাই, টান রে সবাই টান। বোঝা যত বোঝাই করি করব রে পর দুখের তরী, । ঢেউয়ের ‘পরে ধরব পাড়ি যায় যদি যাক প্ৰাণ । কে ডাকে রে পিছন হতে, কে করে রে মানা ? ভয়ের কথা কে বলে। আজ, ভয় আছে সব জানা | কোন শাপে কোন গ্রহের দোষে সুখের ডাঙায় থাকব বসে ?— পালের রশি ধরব কষি, চলবে গেয়ে গান | সন্ন্যাসী । ঠাকুর্দা ! r ঠাকুরদাদা। (জিভ কাটিয়া) প্ৰভু, তুমিও আমাকে পরিহাস করবে? সন্ন্যাসী । তুমি যে জগতে ঠাকুর্দা হয়েই জন্মগ্রহণ করেছ, ঈশ্বর সকলের সঙ্গেই তোমার হাসির সম্বন্ধ পাতিয়ে দিয়ে বসেছেন, সে তো তুমি লুকিয়ে রাখতে পারবে না ! ছোটাে ছােটাে ছেলেগুলির কাছেও ধরা পড়েছ, আর আমাকেই ফাঁকি দেবে ? : r ঠাকুরদাদা। ছেলে-ভোলানোই যে আমার কাজ- তা ঠাকুর, তুমিও যদি ছেলের দলেই ভিড়ে যাও তা হলে কথা নেই। তা, কী আজ্ঞা করি ! সন্ন্যাসী। আমি বলছিলেম ঐ-যে গানটা গাইলে, ওটা আজ ঠিক হল না। দুঃখ নিয়ে ঐ অত্যন্ত টানাটানির কথাটা, ওটা আমার কানে ঠিক লাগছে না। দুঃখ তো জগৎ ছেয়েই আছে, কিন্তু চার দিকে চেয়ে দেখে-না- টানাটানির তো কোনো চেহারা দেখা যায় না। তাই এই শরৎ-প্রভাতের মান রাখবার জন্যে আমাকে আর-একটা গান গাইতে হল । ** ঠাকুরদাদা। তোমাদের সঙ্গ এইজন্যই এত দামি ; ভুল করলেও ভুলকে সার্থক করে তোল ।