পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূৱৰী & o না জানি সে কোন শাস্ত শিউলি-ঝরার শুক্লরাতে, দক্ষিণের দোলা-লাগা পাখি-জাগা বসস্তপ্রভাতে ; নবমল্পিকার কোন আমন্ত্রণ-দিনে ; শ্রাবণের ঝিল্লিমন্দ্র-সঘন সন্ধ্যায় ; মুখরিত প্লাবনের অশাস্ত নিশীথ রাত্রে ; হেমস্তের দিনাস্তবেলায় কুহেলি-গুণ্ঠনতলে । ধরণীতে প্রাণের খেলায় ংসারের যাত্রাপথে এসেছি তোমার বহু আগে, স্থখে দুঃখে চলেছি আপন মনে ; তুমি অস্থরাগে এসেছিলে আমার পশ্চাতে, বৰ্ণশিখানি লয়ে হাতে মুক্ত মনে, দীপ্ত তেজে, ভারতীর বরমাল্য মাথে । আজ তুমি গেলে আগে ; ধরিত্রীর রাত্রি আর দিন তোমা হতে গেল খসি, সর্ব আবরণ করি লীন চিরস্তন হলে তুমি, মর্ত্য কবি, মুহুর্তের মাঝে । গেলে সেই বিশ্বচিত্তলোকে, যেথা স্বগম্ভীর বাজে আনস্তের বীণা, যার শব্দহীন সংগীতধারায় ছুটেছে রূপের বন্ত গ্রহে স্বর্ষে তারায় তারায় । সেথা তুমি অগ্রজ আমার ; যদি কভু দেখা হয়, পাব তবে সেথা তব কোন অপরূপ পরিচয় কোন ছন্দে, কোন রূপে ? যেমনি অপূর্ব হ’ক নাকো, তবু আশা করি যেন মনের একটি কোণে রাখ ধরণীর ধুলির স্মরণ, লাজে ভয়ে দুঃখে স্থখে বিজড়িত,—আশা করি, মর্ত্যজন্মে ছিল তব মুখে * , ষে-বিনম্র ক্ষিঞ্চ হাস্থত, ষে স্বচ্ছ সতেজ সরলতা, সহজ সত্যের প্রভা, বিরল সংযত শান্ত কথা, তাই দিয়ে আরবার পাই যেন তব অভ্যর্থনা অমর্ত্যলোকের দ্বারে,--ব্যর্থ নাহি হ’ক এ কামনা । আষাঢ়, ১৩২৯