পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

卿领 ঘাটের কথা পাষাণে ঘটনা ঘদি অঙ্কিত হইত তবে কতদিনকার কত কথা আমার সোপানে সোপানে পাঠ করিতে পারিতে । পুরাতন কথা যদি শুনিতে চাও, তবে আমার এই ধাপে বইস ; মনোযোগ দিয়া জলকজোলে কান পাতিয়া থাকে, বহুদিনকার কত বিশ্বত কথা শুনিতে পাইবে । আমার আর-একদিনের কথা মনে পড়িতেছে। সেও ঠিক এইরূপ দিন। আশ্বিন মাস পড়িতে আর দুই-চারি দিন বাকি আছে। ভোরের বেলায় অতি ঈষৎ মখুর নবীন গীতের বাতাস নিত্ৰোখিতের দেহে নূতন প্রাণ জানিয়া দিতেছে। তরু-পরব অমনি একটু একটু শিহরিয়া উঠিতেছে। ভর গঙ্গা। অামার চারিটিমাত্র ধাপ জলের উপরে জাগিয়া আছে । জলের সঙ্গে স্থলের সঙ্গে যেন গলাগলি । তীরে জাম্বকাননের নিচে যেখানে কচুবন জঙ্কিয়াছে, সেখান পর্বত্ত গঙ্গার জল গিয়াছে। নদীর ওই বাকের কাছে তিনটে পুরাতন ইটের পাজ চারিদিকে জলের মধ্যে জাগিয়া রহিয়াছে। জেলেদের ষে নৌকাগুলি ডাঙার বাবলাগাছের গুড়ির সঙ্গে বাধা ছিল সেগুলি প্রভাতে জোয়ারের জলে ভাসিয়া উঠিয়া টলমল করিতেছে—দুরন্তীেবন জোয়ারের জল রঙ্গ করিয়া তাহাজের দুই পাশে ছল ছল আঘাত করিতেছে, তাহাজের কর্ণ ধরিয়া মধুর পরিহাসে নাড়া দিয়া যাইতেছে। ভরা গঙ্গার উপরে শরৎপ্ৰভাতের ষে রোজ পড়িয়াছে, তাহার কাচা সোনার মতো রং, চাপা ফুলের মতে রং । রৌজের এমন রং জার কোনো সময়ে দেখা যায় না। চড়ার উপরে কাশবনের উপরে রৌত্র পড়িয়াছে। এখনও কাশফুল সব ফুটে নাই, ফুটিতে আরম্ভ করিয়াছে মাত্র। o * রাম রাম বলিয়া মাঝিরা নৌকা খুলিয়া ছিল। পাখিরা যেমন আলোতে পাখা মেলিয়া আনন্দে নীল আকাশে উড়িয়াছে, ছোটো ছোটো নৌকাগুলি তেমনি ছোটো ছোটো পাল ফুলাইয়া সূর্বকিরণে বাহির হইয়াছে। ভাষাদের পাখি বলিয়া মনে