পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩১২ ब्रदौटछ-ब्रछनांबलौ সম্পূর্ণ করে পাওয়া যায় না। জীবন নানা সীমার দ্বারা আপনাকে বেষ্টিত করে রক্ষা করে—সেই সীমা কিছু-না-কিছু বাধা রচনা করে । মৃত্যুর দ্বারাই সেই মহাপুরুষ র্তার জীবনকে সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করেছেন—তার সমস্ত বাধা দূর হয়ে গেছে—এই জীবনকে নিয়ে আমাদের কোনো সাংসারিক প্রয়োজনের তুচ্ছতা নেই, কোনো লৌকিক ও সাময়িক সম্বন্ধের ক্ষুদ্রতা নেই। তার সঙ্গে কেবল একটি মাত্র সম্পূর্ণ যোগ হয়েছে, সে হচ্ছে অমৃতের যোগ । মৃত্যুই এই অমৃতকে প্রকাশ করে । মৃত্যু আজ তার জীবনকে আমাদের প্রত্যেকের নিকটে এনে দিয়েছে, প্রত্যেকের অস্তরে এনে দিয়েছে । এখন আমরা যদি প্রস্তুত থাকি, যদি তাকে গ্রহণ করি, তবে র্তার জীবনের সঙ্গে আমাদের জীবনের রাসায়নিক সম্মিলনের কোনো ব্যাঘাত থাকে না । র্তার পার্থিব জীবনের উৎসর্গ আজ কিনা ব্রন্ধের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছে সেইজন্যে তিনি আজ সম্পূর্ণরূপে আমাদের সকলের হয়েছেন। বনের ফুল পূজা-অবসানে প্রসাদীফুল হয়ে আজ বিশেষরূপেই সকলের সামগ্রী হয়েছেন। আজ সেই ফুলে তার পূজার পুণ্য সম্পূর্ণ হয়েছে, আজ সেই ফুলে তার দেবতার আশীৰ্বাদ মূর্তিমান হয়েছে। সেই পবিত্র নির্মাল্যটি মাথায় করে নিয়ে আজ আমরা বাড়ি চলে ৰাব এইজন্য তার মৃত্যুদিনের উৎসব। বিশ্বপাবন মৃত্যু আজ স্বয়ং সেই মহৎজীবনকে আমাদের সম্মুখে উদঘাটন করে দাড়িয়েছেন—অদ্যকার দিন আমাদের পক্ষে যেন ব্যর্থ না হয় । একদিন কোন ৭ই পৌষে তিনি একলা অমৃতজীবনের দীক্ষা গ্রহণ করেছিলেন, সেদিনকার সংবাদ খুব অল্পলোকেই জেনেছিল । ৬ই মাঘে মৃত্যু যখন যবনিক উদঘাটন করে দাড়ল তখন কিছুই আর প্রচ্ছন্ন রইল না। তার একদিনের সেই একলার দীক্ষা আজ আমরা সকলে মিলে গ্রহণ করবার অধিকারী হয়েছি। সেই অধিকারকে আমরা সার্থক করে যাব । ৬ মাঘ, কলিকাতা