পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূরবী ছবি ক্ষুব্ধ চিহ্ন একে দিয়ে শাস্ত সিন্ধুবুকে তরী চলে পশ্চিমের মুখে । আলোক-চুম্বনে নীল জল করে ঝলমল । দিগন্তে মেঘের জালে বিজড়িত দিনাস্তের মোহ, স্থর্যাস্তের শেষ সমারোহ । উধেব যায় দেখা তৃতীয়ার শীর্ণ শশিলেখা । যেন কে উলঙ্গ শিশু কোথায় এসেছে জানে না সে, নি:সংকোচে হাসে । বহে মন্দ মন্থর বাতাস সঙ্গশূন্ত সায়াহ্নের বৈরাগ্য-নিঃশ্বাস । স্বৰ্গস্থখে ক্লাস্ত কোন দেবতার বাশির পূরবী শূন্ততলে ধরে এই ছবি । ক্ষণকাল পরে যাবে ঘুচে, উদাসীন রজনীর কালো কেশে সব দেবে মুছে । এমনি রঙের খেলা নিত্য খেলে আলো আর ছায়া, এমনি চঞ্চল মায়া জীবন-অম্বরতলে ; দুঃখে মুখে বর্ণে বর্ণে লিখা চিহ্নহীন পদচারী কালের প্রাস্তরে মরীচিকা । তার পরে দিন যায়, অস্ত যায় রবি ; যুগে যুগে মুছে যায় লক্ষ লক্ষ রাগরক্ত ছবি । তুই হেথা কবি, এ বিশ্বের মৃত্যুর নিঃশ্বাস আপন বঁাশিতে ভরি গানে তারে বঁাচাইতে চাস । হারুনা-মারু জাহাজ ২ অক্টোবর, ১৯২৪