পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূরবী ডাকে না যে যাবার বেলায় যাস নে তাহার পিছে পিছে । যাওয়া-আসা-পথের ধুলায় চপল পায়ের চিহ্নগুলায় গনে গনে আপন মনে কাটাস নে দিন মিছে মিছে । কী হবে তোর বোঝাই করে ব্যর্থ দিনের আবর্জনা ; স্বপ্ন শুধুই মর্ত্যে অমর, আর সকলি বিড়ম্বন । নিত্য প্রাণের সত্য তাই, প্রাণ দিয়ে তুই রচিস যারে,—অসীম পথের পথ্য তাই । লিসবন বন্দর, আগুেল জাহাজ ২০ অক্টোবর, ১৯২৪ সমুদ্র হে সমুদ্র, স্তন্ধচিত্তে শুনেছিন্থ গর্জন তোমার রাত্রিবেলা ; মনে হল গাঢ় নীল নিঃসীম নিদ্রার স্বপ্ন ওঠে কেঁদে কেঁদে । নাই, নাই তোমার সান্থনা ; যুগযুগান্তর ধরি নিরস্তর স্বষ্টির যন্ত্রণা তোমার রহস্ত-গর্তে ছিন্ন করি কৃষ্ণ আবরণ প্রকাশ সন্ধান করে । কত মহাদ্বীপ মহাবন এ তরল রঙ্গশালে রূপে প্রাণে কত নৃত্যে গানে দেখা দিয়ে কিছুকাল, ডুবে গেছে নেপথ্যের পানে নিঃশব্দ গভীরে । হারানো সে চিহ্নহারা যুগগুলি মৃতিহীন ব্যর্থতায় নিত্য অন্ধ আন্দোলন তুলি হানিছে তরঙ্গ তব । সব রূপ সব নৃত্য তার ফেনিল তোমার নীলে বিলীন দুলিছে একাকার । স্থলে তুমি নানা গান উৎক্ষেপে করেছ আবর্জন, জলে তব এক গান, অব্যক্তের অস্থির গর্জন । चै. হে সমুদ্র, এক আমি মধ্যরাতে নিদ্রাহীন চোখে কজোল-মরুর মধ্যে দাড়াইয়া স্তন্ধ উধ্ব লোকে