পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sෙඳා রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী বিত্বত সে অসুনিধি, সমুচ্চ সে গিরিবর, তীমাধার সে পর্বতের গহবর বিশাল, তটিনীর কলধবনি, নিৰ্ব্বরের কার কার, আরণ্য বিহঙ্গদের স্বাধীন সংগীত, পারে না পূরিতে তারা বিশাল মনুষ্য-হৃদি মানুষের মন চায় মানুবেরি মন ।” শুনিয়া, প্ৰকৃতিদেবি, ভ্ৰমিনু পৃথিবীময় ; কত লোক দিয়েছিল হৃদি উপহারআমার মর্মের গান যাবে গাহিতাম দেবি কত লোক কেঁদেছিল শুনিয়া সে গীত । তেমন মনের মতো মন পেলাম না দেবি, আমার প্রাণের কথা বুঝিল না কেহ, তাইতে নিরাশ হয়ে আবার এসেছি ফিরে, বুঝি গো এ শূন্য মন পূরিল না। আর ” এইরাপ কেঁদে কেঁদে কাননে কাননে কবি একাকী আপন-মনে করিত ভ্ৰমণ । সে শোক-সংগীত শুনি কাদিত কাননীবালা, নিশীথিনী হাহা করি ফেলিত নিশ্বাস, বনের হরিণগুলি আকুল নয়নে আহা কবির মুখের পানে রহিত চাহিয়া । “হাহা দেবি একি হল , কোন পরিল না প্ৰাণী” প্ৰতিধবনি হত তার কাননে কাননে । শীর্ণ নিকারিণী যেথা ঝরিতেছে মৃদু মৃদু, সেখানে গাছের তলে একাকী বিষয়ে কবি নীরবে নয়ন মুদি থাকিত শুইয়াতুষিত হরিণশিশু সলিল করিয়া পান দেখি তার মুখপানে চলিয়া যাইত । শীতরাত্রে পর্বতের তুবারশয্যার ‘পরে বসিয়া রহিত স্তৱদ্ধ প্ৰতিমার মতো, মাথার উপরে তার পড়িত তুষারকণা, তীব্ৰতম শীতবায়ু যাইত বহিয়া । দিনে দিনে ভাবনায় শীর্ণ হয়ে গেল দেহ, প্ৰফুল্ল হৃদয় হল বিবাদে মলিন, রাক্ষসী স্বপ্নের তরে ঘুমালেও শান্তি নাই, পৃথিবী দেখিত কবি শ্মশানের মতো এক দিন অপরাহুে বিজন পথের প্রান্তে কবি বৃক্ষতলে এক রয়েছে শুইয়া, পথশ্রমে শ্ৰান্ত দেহ, চিন্তায় আকুল হৃদি, বহিতেছে বিষাদের আকুল নিশ্বাস । হেন কালে ধীরি। ধরি শিয়রের কাছে আসি