পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কবি-কাহিনী 88) হেথায় ঝোপের মাঝে প্রচ্ছন্ন তীমাধার, হোথায় সরাসীবক্ষে প্ৰশান্ত জোছনা । নভপ্ৰতিবিম্ব শোভী ঘুমন্ত সরাসী চন্দ্র তারকার স্বপ্ন দেখিতেছে যেন ! লীলাময়ী প্রবাহিণী চলেছে ছুটিয়া, ‘লীলাভঙ্গ বুকে তার পাদপের ছায়া ভেঙে চুরে কত শত ধরিছে মুরতি । গাইছে। রজনী কিবা নীরব সং কেমন নীরব বন নিস্তৱন্ধ গভীরশুধু দূর-শৃঙ্গ হতে ঝরিছে নিকরি, শুধু এক পাশ দিয়া সংকুচিত অতি “তটিনীটি সর। সারা যেতেছে চলিয়া । অধীর বসন্তবায়ু মাঝে মাঝে শুধু করকারি বঁকা পাইছে গাছের পল্লব । এহেন নিস্তাৱন্ধ রাত্রে কত বার আমি গাওঁীর অরণ্যে একা করেছি। ভ্ৰমণ । সিন্ধ রাত্রে গাছপালা বিমাইছে যেন, ছায়া তার পড়ে আছে হেথায় হোথায় । দেখিয়াছি। নীরবতা যত কথা কয় setCest XIsta-VSCől, aV5 G-p3 -R | দেখি যাবে অতি শান্ত জোছনায় মজি নীরবে সমস্ত ধরা রয়েছে ঘুমায়ে, জানি না। কী এক ভাবে প্ৰাণের ভিতর উচ্ছসিয়া উথলিয়া উঠে গো কেমন ! কী যেন হারায়ে গেছে। খুঁজিয়া না পাই, কী কথা ভুলিয়া যেন গিয়েছি সহসা, বলা হয় নাই যেন প্ৰাণের কী কথা, প্ৰকাশ করিতে গিয়া পাই না তা খুঁজি ! কে আছে এমন যার এহেন নিশীথে, পুরানো সুখের স্মৃতি উঠে নি উথলি ! কে আছে এমন যার জীবনের পথে এমন একটি সুখ যায় নি হারায়ে, যে হারা-সুখের তরে দিবা নিশি তার হৃদয়ের এক দিক শান্য হয়ে আছে । এমন নীরব-রাত্রে সে কি গো কখনো ফেলে নাই মৰ্মভেদী একটি নিশ্বাস ? কতস্থানে আজ রাত্রে নিশীথপ্ৰদীপে উঠিছে প্ৰমোদধবনি বিলাসীর গৃহে । মুহুর্ত ভাবে নি তারা আজ নিশীথেই কত চিত্ত পুড়িতেছে প্রচ্ছন্ন অনলে ।