পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ननिी Գ ֆֆ 9 কি ভাই, তুমি মুখ ঢেকে আমন করে বসে আছ কেন ? ও কি তুমি কঁাদচ কেন ভাই ? নলিনী । (তাড়াতাড়ি চোখ মুছিয়া হাসিয়া উঠিয়া) কই, কঁদচি কই ফুলি। আমি মনে করেছিলুম, তুমি কঁাদচ ! নবীনের প্রবেশ নলিনী। ঐ যে নবীন এয়েচে, চল ওর কাছে যাই ! (কাছে আসিয়া) আজ যে তুমি এত দেরি করে a নবীন । (হাসিয়া) একটুখানি তিরস্কার পাবার ইচ্ছা হয়েছিল। আমি দেরি করে এলে তোমারও যে দেরি মনে হয় এটা মাঝে মাঝে শুনতে ভালো লাগে নলিনী। বটে! তিরস্কারের সুখটা একবার দেখিয়ে দেব। দে তো ফুলি, ওর গায়ে একটা কঁটা ফুটিয়ে দে তো। নবীন। ও যন্ত্রণাটা ভাই এক রকম সওয়া আছে। ওতে আর বেশী কি হ’ল ? ওটা তো আমার দৈনিক পাওনা ! যতগুলি কঁাটা এইখেনে ফুটিয়েছ, সবগুলি যত্ন ক'রে প্রাণের ভিতর বিধিয়ে রেখেচি— তার একটিও ওপড়ায় নি, আর যায়গা কোথায় ? নলিনী । ও বড় কথা কচ্চে ফুলি- দে তো ওকে সেই গানটা শুনিয়ে । ও কেন সাথে ফেরে আঁধারমুখে • দিন রজনী ! নবীন। আমারও ভাই একটা গান আছে, কিন্তু গলা নেই। কি দুঃখ ! প্ৰাণের মধ্যে গান আকুল হয়ে উঠেচে, কেবল গলা নেই বলে কেউ একদণ্ড মন দিয়ে শুনবে না ! কিন্তু গলাটাই কি সব হ’ল ! গানটা কি কিছুই নয় ? গানটা শুনতেই হবে। কালাংড়া ভালোবাসিালে যদি সে ভালো না বাসে কেন সে দেখা দিল ! মধু অধরের মধুর হাসি প্ৰাণে কেন বিরষিল । দাড়িয়েছিলেম পথের ধারে, সহসা দেখিলেম তারেनाशन ग्रू झुएल एकन মুখের পানে চেয়ে গেল ! নলিনী । আর ভালো লাগচে না । (স্বগত) মিছিমিছি কথা কাটাকাটি করে আর পারি নে। একটু একলা হলে বাচি। (ফুলির প্রতি) আয় ফুলি, আমরা একটু বেড়িয়ে আসি গে। [প্ৰস্থান নীরদ । এমন প্রশান্ত নিস্তব্ধ সন্ধ্যায়। অমনতর চপলতা কি কিছুমাত্র শোভা পায় ! সন্ধ্যার এমন শান্তিময় স্তব্ধতার সঙ্গে ঐ গান বাজনা হাসি তামাসা কি কিছুমাত্র মিশ খায় ? একটু হৃদয় থাকলে কি এমন সময়ে এমনতর চপলতা প্ৰকাশ করতে পারত ? আমোদ প্রমোদের কি একটুও বিরাম নেই ?