পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ SN) রবীন্দ্র-রচনাবলী ললিতা সে সুরেশের হাতে হাত জড়াইয়া বসন্তহসিত বনে ভ্ৰমিত হরষমনে, করুণাচরণক্ষেপে ফুলরাশি মাড়াইয়া । একটি দুৰ্গম শৈল সাগরে পড়েছে কুঁকিঅতি ক্লেশে সেথা উঠি বসিয়া রহিত দুটি, সায়াহ্ন কিরণ জলে করিত গো ঝিকিমিকি । লহরীরা শৈল-'পরে শৈবালগুলির তরে ফুল-ভরা গুল্মগুলি সলিলে পড়েছে বুলি, তরঙ্গের সাথে সাথে ওঠে পড়ে শতবার । বিভলা মেদিনীবালা জোছনামন্দিরা-পানে, হাসিছে সরসীখানি কাননের মাঝখানে, সুরেশ যতনে অতি বাধি তরুশাখাগুলি নীেকা নিরমিয়া এক সরসে দিয়াছে খুলিচড়ি সে নীেকার পরে জ্যোৎস্নাসুপ্ত সরোবরে সুরেশ মনের সুখে ভ্ৰমিত গো ফিরি ফিরি, ললিতা থাকিত শুয়ে কোলে তার মাথা থুয়ে, কখন বা মধুমাখা গান গেয়ে ধীরি ধীরি। । কখন বা সায়াহ্নের বিষগ্ন কিরণজালে, অথবা জোছনা যাবে কঁপে বকুলের ডালে, মৃদু মৃদু বসন্তের স্নিগ্ধ সমীরণ লাগি, সহসা ললিতােহদি আকুলি উঠিত যদি, সহসা দুয়েক কথা স্মরণে উঠিত জাগি, সহসা একটি শ্বাস বাহিরিত আনমনে, দুইটি অশ্রুর রেখা দেখা দিত দু-নয়নে— অমনি সুরেশ আসি ধরি তার মুখখানি কহিত করুণ স্বরে কত আদরের বাণী । মুছাইত আঁখিধারা যতন করিয়া আতি, শরতমেঘের মতো হাদয়-আঁধার যত অমনি সে সুরেশের কাধে মুখ লুকাইয়া আধো কাদি আধো হাসি হৃদয়ের ভাররাশি সোহাগের পারাবারে দিত সব বিসৰ্জিয়া। পঞ্চম সগ নারিকেল-তরুকুঞ্জে বসিয়া দোহায় একদা সেবিতেছিল প্ৰভাতের বায়সহসা দেখিল চাহি প্ৰাণপণে দাড় বাহি তরণী আসিছে এক সে দ্বীপের পানে,