পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সোমশংকর। নিজেকে কখনো তুমি ভুল বোঝাও না ৰাশি । তুমি নিশ্চিত কাম আমি বড়ো করে দেখতে পারতুম না। হয়তো সেইখানেই বাধত সংঘাত। আজ পর্যন্ত তোমার ব্রতের সঙ্গেই আমার শক্ৰতা । তবে এই শক্রর দুর্গে কোন সাহসে তুমি এলে। একদিন যে-শক্তি আমার মধ্যে দেখেছিলে আজ কিছু কি তার অবশিষ্ট নেই । ভয় করবে না ? সোমশংকর। শক্তি একটুও কমে নি, তবু ভয় করব না। বঁাশরি। যদি তেমন করে পিছু ডাকি এড়িয়ে যেতে পারবে ? সোমশংকর। কী জানি, না পারতেও পারি। বঁাশরি। তবে ? 觀 সোমশংকর । তোমাকে বিশ্বাস করি । আমার সত্য কখনোই ভাঙা পড়বে না তোমার হাতে। সংকটের মুখে যাবার পথে আমাকে হেয় করতে পারবে না তুমি। নিশ্চিত জান, সত্যভঙ্গ হলে আমি প্রাণ রাখব না। মরব তুষানলে পুড়ে। বাশরি। শংকর, তুমি ক্ষত্রিয়ের মতোই ভালোবাসতে পার। শুধু ভাব দিয়ে নয় বীর্য দিয়ে। সত্যি করে বলো, আজও কি আমাকে সেদিনের মতোই ততখানি ভালোবাস । সোমশংকর । ততখানিই । বাশরি। আর কিছুই চাই নে আমি। স্বযমাকে নিয়ে পূর্ণ হোক তোমার ব্রত, তাকে ঈর্ষা করব না। সোমশংকর। একটা কথা বাকি আছে । বঁাশরি। কী, বলে । সোমশংকর । আমার ভালোবাসার কিছু চিহ্ন রেখে যাচ্ছি তোমার কাছে, ফিরিয়ে দিতে পারবে না । ( অলংকারের সেই থলি বের করলে ) বঁাশরি ; ও কী, ওসব-যে তলিয়ে ছিল জলে । সোমশংকর। ডুব দিয়ে আবার তুলে এনেছি। বঁাশরি। মনে করেছিলুম আমার সব হারিয়েছে। ফিরে পেয়ে অনেকখানি বেশি করে পেলুম। নিজের হাতে পরিয়ে দাও আমাকে । (লোমশংকর গয়না