পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ులరి রবীন্দ্র-রচনাবলী ८ळांब्रांशे शन মহাকাব্যের যুগে স্ত্রীকে পেতে হত পৌরুষের জোরে ; ষে অধিকারী সেই লাভ করত রমণীরত্ব । আমি লাভ করেছি কাপুরুষতা দিয়ে, সে-কথা আমার স্ত্রীর জানতে বিলম্ব ঘটেছিল। কিন্তু, সাধনা করেছি বিবাহের পরে, যাকে ফাকি দিয়ে চুরি করে পেয়েছি তার মূল্য দিয়েছি দিনে দিনে । দাম্পত্যের স্বৰ সাব্যস্ত করতে হয় প্রতিদিনই নতুন করে, অধিকাংশ পুরুষ ভুলে থাকে এই কথাট। তারা গোড়াতেই কাস্টম হোঁসে মাল খালাস করে নিয়েছে সমাজের ছাড়চিঠি দেখিয়ে, তার পর থেকে আছে বেপরোয় । যেন পেয়েছে পাহারাওয়ালার সরকারি প্রতাপ, উপরওয়ালার দেওয়া তকমার জোরে ; উদিটা খুলে নিলেই অতি অভাজন তারা । বিবাহট চিরজীবনের পালাগান ; তার ধুয়ো একটামাত্র, কিন্তু সংগীতের বিভার প্রতিদিনের নব নব পর্যায়ে। এই কথাটা ভালোরকম করে বুঝেছি স্বনেত্রার কাছ থেকেই। ওর মধ্যে আছে ভালোবাসার ঐশ্বর্য, ফুরোতে চায় না তার সমারোহ ; দেউড়িতে চার-প্রহর বাজে তার সাহানা রাগিণী । আপিস থেকে ফিরে এসে একদিন দেখি আমার জন্তে সাজানো আছে বরফ-দেওয়া ফলসার শরবত, রঙ দেখেই মনটা চমকে ওঠে ; তার পাশেই ছোটো রুপোর থালায় গোড়ে মালা, ঘরে ঢোকবার আগেই গন্ধ আসে এগিয়ে। আবার কোনোদিন দেখি আইসক্রিমের যন্ত্রে জমানো শাসে রসে মেশানো তালশাস এক-পেয়ালা, আর পিরিচে একটিমাত্র স্থৰ্যমুখী। ব্যাপারটা শুনতে বেশি কিছু নয়, কিন্তু বোঝা যায়, দিনে দিনে নতুন করে সে অনুভব করেছে আমার অস্তিত্ব। এই পুরোনোকে নতুন করে অনুভব করার শক্তি আর্টিস্টের । আর ইতরে জনা: প্রতিদিন চলে দস্তুরের দাগ বুলিয়ে। ভালোবাসার প্রতিভা স্থনেত্রার নবনবোন্মেষশালিনী সেবা। আজ আমার মেয়ে অরুণার বয়স সতেরো, অর্থাৎ ঠিক যে-বয়সে বিয়ে হয়েছিল স্বনেত্রার। ওর নিজের বয়স আটত্রিশ, কিন্তু সযত্বে সাজসজ্জা করাটাকে ও জানে প্রতিদিন পুজোর নৈবেদ্য-সাজানো, আপনাকে উৎসর্গ করবার আহিক অনুষ্ঠান । স্বনেত্রা ভালোবাসে শান্তিপুরে সাদা শাড়ি কালো পাড়ওয়ালা। খন্দরপ্রচারকদের ধিক্কারকে বিনা প্রতিবাদে স্বীকার করে নিয়েছে ; কিছুতেই স্বীকার করে নি খদ্দরকে । ও বলে দিশি তাতির হাত, দিশি তাতির তাত, এই আমার আদরের। তারা শিল্পী, তাদেরই পছন্দে স্বতো, আমার পছন্দ সমস্ত কাপড়টা নিয়ে। আসল কথা, মুনেত্র