পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী ه چه ي চৌকিও নাই, তার সেই বেতগাছটাও নাই । এখন তাহাকে এই শিঙ্গটির মন জোগাইয়া চলিতে হয়। তাই যুদ্ধে বিগ্রহে, পরজাতির সহিত ব্যবহারে, য়ুরোপ যতকিছু অন্তায় করিয়াছে খৃস্টসংঘ তাহাতে আপত্তি করে নাই বরঞ্চ ধর্মকথার ফোড়ঙ দিয়া তাহাকে উপাদেয় করিয়া তুলিয়াছে। لا এ দিকে ক্ষত্রিয়ের তলোয়ার প্রায় বেবাক গলাইয়া ফেলিয়া লাঙলের ফলা তৈরি হইল । তাই ক্ষত্রিয়ের দল বেকার বসিয়া বৃথা গোফে চাড়া দিতেছে। তাহার। শেঠজির মালখানার দ্বারে দরোয়ানগিরি করিতেছে মাত্র। বৈশুই সব-চেয়ে মাথা তুলিয়া উঠিল। o এখন সেই ক্ষত্রিয়ে বৈশ্বে “অষ্ঠ যুদ্ধ ত্বয়া ময়া” । দ্বাপর যুগে আমাদের হলধর বলরামদাদা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে যোগ দেন নাই। কলিযুগে তার পরিপূর্ণ মদের ভাড়টিতে হাত পড়িবা মাত্র তিনি হুংকার দিয়া ছুটিয়াছেন। এবারকার কুরুক্ষেত্রযুদ্ধের প্রধান সর্দার কৃষ্ণ নহেন, বলরাম । রক্তপাতে র্তার রুচি নাই— রজতফেনোচ্ছল মদের টোক গিলিয়া এতকাল ধরিয়া তার নেশা কেবলই চড়িয়া উঠিতেছিল ; এবারকার এই আচমকা উৎপাতে সেই নেশা কিছু ছুটিতে পারে কিন্তু আবার সময়কালে দ্বিগুণ বেগে মেীতাত জমিবে সে আশঙ্কা আছে । ইহার পরে আর-একটা লড়াই সামনে রহিল, সে বৈশ্বে শূত্রে মহাজনে মজুরে— কিছুদিন হইতে তার আয়োজন চলিতেছে। সেইটে চুকিলেই বর্তমান মন্থর পাল৷ শেষ হইয়া নূতন মন্বস্তর পড়িবে। , # বণিকে সৈনিকে লড়াই তো বাধিল কিন্তু এই লড়াইয়ের মূল কোথায় সেটা জিজ্ঞাসা করিবার বিষয়। সাবেক-কালের ইতিহাসে দেখা যায় যারা কারবারী তার রাজশক্তির আশ্রয় পাইয়াছে, কখনো-বা প্রশ্রয় পাইয়াছে, কখনো-বা অত্যাচার ও অপমান সহিয়াছে কিন্তু লড়াইয়ের আসরে তাহাদিগকে নামিতে হয় নাই। সেকালে ধন এবং মান স্বতন্ত্র ছিল, কাজেই ব্যবসায়ীকে তখন কেহ খাতির করিত না বরঞ্চ অবজ্ঞাই করিত । , কেননা জিনিস লইয়া মানুষের মূল্য নহে, মানুষ লইয়াই মানুষের মূল্য। তাই যে কালে ক্ষত্রিয়েরা ছিল গণপতি এবং বৈপ্তেরা ছিল ধনপতি তখন তাহাদের মধ্যে ৰাগড়া ছিল না । তখন ঝগড়া ছিল ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়ে । কেননা তখন ব্রাহ্মণ তো কেবলমাত্র যজনৰাজন অধ্যয়ন-অধ্যাপন লইয়া ছিল না— মানুষের উপর প্রভূত্ব বিস্তার করিয়াছিল। তাই ক্ষত্রিয়-প্ৰভু ও ব্রাহ্মণ-প্রভুতে সর্বদাই ঠেলাঠেলি চলিত ; বশিষ্ঠে বিশ্বামিত্রে