পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఇతి. রবীন্দ্র-রচনাবলী বিধাতা আমাদের একটা দিকে নিশ্চিম্ভ করেছেন, ঐ বলের দিকটায় আমাদের রাপ্ত একেবারে শেষ ফাকটুকু পর্যন্ত বন্ধ, যে-আশা রাপ্ত না পেলেও উড়ে চলে সেই আশারও ডানা কাটা পড়েছে। আমাদের জন্তে কেবল একটা বড়ো পথ আছে, সে হচ্ছে দুঃখের উপরে যাবার পথ। রিপু আমাদের বাইরে থেকে আঘাত দিচ্ছে দিক, তাকে আমরা অন্তরে আশ্রয় দেব না। যারা মারে তাদের চেয়ে আমরা যখন বড়ে হতে পারব তখন আমাদের মার-খাওয়া ধম্ভ হবে । সেই বড়ো হবার পথ না লড়াই করা, না দরখাস্ত লেখা । অথ ধীরা অমৃতত্বং বিদিত্বা ধ্ৰুবম অঞ্জবেহি ন প্রার্থন্তে । \S) অন্তের সঙ্গে কথা কওয়া এবং অন্তের সঙ্গে চিঠি লেখার ব্যবস্থা আছে সংসার জুড়ে। আর নিজের সঙ্গে ? সেটা কেবল এই বাতায়নটুকুতে। কিন্তু নিজের মধ্যে কার সঙ্গে কে কথা কয় । একটা উপমা দেওয়া যাক। মাটির জলের খানিকটা সূক্ষ্ম হয়ে মেঘ হয়ে আকাশে উড়ে যায়। সেখান থেকে সেই নির্মল দূরত্বের সংগীত এবং উদার বেগ নিয়ে ধারায় ধারায় পুনর্বার সে মাটির জলে ফিরে আসতে থাকে। এই জলেরই মতো মানুষের মনের একটা ভাগ সংসারের উর্ধের্ব আকাশের দিকে উড়ে যায়, সেই আকাশচারী মনটা মাঝে মাঝে আবার যদি এই ভূচর মনের সঙ্গে মিলতে পারে তবে তাতেই পূর্ণতা ঘটে। কিন্তু এমন-সকল মরুপ্রদেশ আছে যেখানে প্রায় সমস্ত বৎসর ধরেই অনাবৃষ্টি । বাপ হয়ে যা উপরে চলে গেল বর্ষণ হয়ে তা আর ধরায় নেমে আসে না । নীচের মনের সঙ্গে উপরের মনের আর মিলন হয় না । সেখানে খাল-কাটা জলে কাজ চলে যায়, কিন্তু সেখানে আকাশের সঙ্গে মাটির শুভসংগমের সংগীত এবং শঙ্খধ্বনি কোথায়। সেখানে বর্ষণমুখরিত রসের উৎসব হল না। সেখানে মনের মধ্যে চিরবিরহের একটা শুষ্কতা রয়ে গেল । এ তো গেল অনাবৃষ্টির কথা । এ ছাড়া মাঝে মাঝে কাদাবৃষ্টি রক্তবৃষ্টি প্রভৃতি নানা উৎপাতের কথা শোনা যায় । আকাশের বিশুদ্ধতা যখন চলে যায়, বাতাস যখন পৃথিবীর নানা আবর্জনায় পূর্ণ হয়ে থাকে তখনই এইসব কাও ঘটে। তখন