গ্রন্থপরিচয় 8æዊ এই প্যারাগ্রাফের মধ্যে কয়েকটি ভাববার কথা আছে। প্রথম হচ্ছে, জার্মানির অবস্থা নিতান্তই নৈরাপ্তজনক, কিন্তু তবুও সেখানকার লোকে সেটাকে চরম বলে মেনে নিয়ে ভাগ্যের নিন্দ করছে না; তার কারণ, তারা সত্যের বর পাবার জন্তে বরাবর বাস্তব পথ অবলম্বন করতে অভ্যস্ত। তারা বুদ্ধিকে মানে বলেই নিজেকে মানে । দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, এরা এ কথা নিঃসন্দেহ জানে যে ভাবী কালের জন্তে যখন উন্নতির নূতন ভিত বসাতে হবে তখন সেটা একমাত্র শিক্ষার দ্বারাই সম্ভবপর। এই উন্নতির দ্বারা তারা যে নিজের ভৌগোলিক সীমার মধ্যে বড়ো হবে তা নয়, সমগ্র যুরোপের সভ্যতার সঙ্গে আপন প্রভাবের দ্বারা সম্মিলিত হবে । তৃতীয় কথা হচ্ছে এই অবস্থা যতই শোচনীয় হোক, ব্যাপারটা যতই দুঃসাধ্য হোক, তবু এটা করাই চাই । এ কথা বলা বাহুল্য, প্রধানতঃ মানুষ শিক্ষার দ্বারাই তৈরি হয়— মানুষ করে তোলা’ কথাটার মধ্যে এই অর্থ আছে। প্রকৃতির ক্রিয়া জন্তুকে জন্তু করে, মানুষের শিক্ষা মানুষকে মানুষ করে তোলে। আজকের দিনে যে মানসিক অবস্থায় আমরা এসে পোঁচেছি—সেটা ভালোই হোক আর মন্দই হোক, সে অবস্থা আমাদের পূর্বকালীন শিক্ষার দ্বারাই ঘটেছে । এই অবস্থা পাকা করবার জন্তে কত শাস্ত্র কত উপদেশ কত ব্যবস্থা আছে তার সীমা নেই। যে বর্তমান অবস্থা এই শিক্ষার ফল, সেটা হচ্ছে ভিতর দিক থেকে মনের স্বাতন্ত্র্যহীনতার অবস্থা। এই অবস্থা কোনোমতেই বাইরের দিকে স্বরাজপ্রতিষ্ঠার অমুকুল হতেই পারে না । অতএব যদি স্বরাজকে প্রার্থনীয় বলেই মনে করি তা হলে আগেকার শিক্ষাকে অতিক্রম করে এমন কোনোরকম শিক্ষা দেশে চালাতে হবে যাতে দেশের লোকের মন বুদ্ধিবৃত্তির স্বরাজের প্রতি আস্থাবান হতে পারে। যে শিক্ষায় আমাদের বর্তমানটা গড়ে উঠেছে সেই শিক্ষাতেই যদি আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে, তা হলে সে আমাদের এই বর্তমানেরই পুনরাবৃত্তি হবে। আজ জার্মানি এ কথা চিন্তা করতে প্রবৃত্ত হয়েছে যে, তার পূর্বতন শিক্ষাবিধির মধ্যে একটা দোষ ছিল — Germans feel that the well-oiled and smoothly running machinelike system of pre-war days was a system that was losing its substance, producing a mechanical form of culture- a culture that was lacking in essentials, a culture that seemed to turn out human beings with most extraordinarily cultivated brains but somehow out of touch with the human heart- science as apart from life, art, craft, learning, ২৪ ॥৩২
