পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(էԵ রবীন্দ্র-রচনাবলী চেষ্টা যখন নগ্ন হয়ে শাখায় পড়ে ধরা, । তখন খেলার রূপ চলে যায়, তখন আসে জরা । বিলাসী নয় মেঘগুলো তো জলের ভারে ভরা, চেহারা তার বিলাসিতার রঙের ভূষণ পরা। বাইরে ওরা বুড়োমিকে দেয় না তো প্রশ্রয় অস্তরে তাই চিরস্তনের বঞ্জমজ রয়। জল-ঝরানো ছেলেখেলা যেমনি বন্ধ করে ফ্যাকাশে হয় চেহারা তার, বয়স তাকে ধরে । দেহের মাঝে হাজার কাজে বহে প্রাণের বায়ু— পালের তরীর মতন যেন ছুটিয়ে চলে আয়ু, বুকের মধ্যে জাগায় নাচন, কণ্ঠে লাগায় স্বর, সকল অঙ্গ অকারণে উৎসাহে ভরপুর। রক্তে যখন ফুরোবে ওর খেলার নেশা খোজা তখনি কাজ অচল হবে, বয়স হবে বোঝা । ওগো তুমি কী করছ ভাই, স্তন্ধ সারাক্ষণ— বুদ্ধি তোমার আড়ষ্ট যে, ঝিমিয়ে-পড়া মন । নবীন বয়স যেই পেরোল খেলাঘরের দ্বারে মরচে-পড়া লাগল তালা, বন্ধ একেবারে । ভালোমন্দ বিচারগুলো খোটায় যেন পোতা। আপন মনের তলায় তুমি তলিয়ে গেলে কোথা । চলার পথে আগল দিয়ে বসে আছ স্থির— বাইরে এসো, বাইরে এসো, পরমগম্ভীর । কেবলই কি প্রবীণ তুমি, নৰীন নও কি তাও । দিনে দিনে ছি ছি কেবল বুড়ো হয়েই যাও ! আশি বছর বয়স হবে ওই যে পিপুলগাছ, এ আশ্বিনের রোদঘুরে ওর দেখলে বিপুল নাচ ? পাতায় পাতায় আবেলি-তাবোল, শাখায় দোলাদুলি, পাস্থ হাওয়ার সঙ্গে ও চায় করতে কোলাকুলি ।