পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩৮ রবীন্দ্র-রচনাবলী বিশাল প্রান্তর, যবে ফিরে গাভীগুলি দূর গোষ্ঠে– মাঠপথে উড়াইয়া ধূলি, তরুঘেরা গ্রাম হতে উঠে ধূমলেখা সন্ধ্যাকাশে ; যবে চন্দ্র দূরে দেয় দেখা শ্রান্ত পথিকের মতো অতি ধীরে ধীরে নদীপ্রান্তে জনশূন্ত বালুকার তীরে ; মনে হয় আপনারে একাকী প্রবাসী নির্বাসিত ; বাহু বাড়াইয়া ধেয়ে আসি সমস্ত বাহিরখানি লইতে অস্তরে— এ আকাশ, এ ধরণী, এই নদীপরে শুভ্ৰ শাস্ত স্থপ্ত জ্যোৎস্নারাশি। কিছু নাহি পারি পরশিতে, শুধু শূন্তে থাকি চাহি বিষাদব্যাকুল । আমারে ফিরায়ে লহ সেই সৰ্বমাঝে, যেথা হতে অহরহ অঙ্কুরিছে মুকুলিছে মুঞ্জরিছে প্রাণ শতেক সহস্ররূপে,— গুঞ্জরিছে গান শতলক্ষ স্বরে, উচ্ছসি উঠিছে নৃত্য অসংখ্য ভঙ্গীতে, প্রবাহি ষেতেছে চিত্ত ভাবস্রোতে, ছিত্রে ছিদ্রে বাজিতেছে বেণু – দাড়ায়ে রয়েছ তুমি খাম কল্পধেনু, তোমারে সহস্ৰ দিকে করিছে দোহন তরুলত পশুপক্ষী কত অগণন তৃষিত পরানি যত, আনন্দের রস কতরূপে হতেছে বর্ষণ, দিক দশ ধ্বনিছে কল্লোলগীতে। নিখিলের সেই বিচিত্র আনন্দ যত এক মুহূর্তেই একত্রে করিব আস্বাদন, এক হয়ে সকলের সনে । আমার আনন্দ লয়ে হবে না কি শুামতর অরণ্য তোমার,— প্রভাত-আলোকমাঝে হবে না সঞ্চার