পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

»ዓ o রবীন্দ্র-রচনাবলী চরণের আভা । বিস্ময়ের নাই সীমা । সেই যেন প্রথম দেখিল আপনারে । শ্বেত শতদল যেন কোরক-বয়স যাপিল নয়ন মুদি,– যেদিন প্রভাতে প্রথম লভিল পূর্ণ শোভা, সেইদিন হেলাইয়া গ্রীবা, নীল সরোবর-জলে প্রথম হেরিল আপনারে, সারাদিন রহিল চাহিয়া সবিস্ময়ে। ক্ষণপরে, কী জানি কী দুখে, হাসি মিলাইল মুখে, মান হল দুটি আঁখি ; বাধিয়া তুলিল কেশপাশ ; অঞ্চলে ঢাকিল দেহখানি ; নিশ্বাস ফেলিয়া, ধীরে ধীরে চলে গেল ; সোনার সায়াহ্ন যথা মান মুখ করি আঁধার রজনীপানে ধায় মৃদুপদে । ভাবিলাম মনে, ধরণী খুলিয়া দিল ঐশ্বৰ্ষ আপন । কামনার সম্পূর্ণত চমকিয়া মিলাইয়া গেল। ভাবিলাম কত যুদ্ধ, কত হিংসা, কত আড়ম্বর, পুরুষের পৌরুষগৌরব, বীরত্বের নিত্য কীর্তিতৃষা, শাস্ত হয়ে লুটাইয়া পড়ে ভূমে, ওই পূর্ণ সৌন্দর্যের কাছে ; পণ্ডরাজ সিংহ যথা সিংহবাহিনীর ভুবনবাঞ্ছিত অরুণ-চরণতলে । আর এক বার যদি— কে দুয়ার ঠেলে ! দ্বার খুলিয়া এ কী ! সেই মূর্তি । শাস্ত হও হে হৃদয় । কোনো ভয় নাই মোরে, বরাননে। আমি ক্ষত্ৰকুলজাত ; ভয়ভীত দুর্বলের ভয়হারী ।