পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গোড়ায় গলদ నలిని আর কিছু দাও বা না দাও, অয়ি অবলে সরলে, বঁচি সেই হাসিভর মুখ আর একবার দেখিলে । আহা হা হা হা ! অবলে সরলে ! কোন এক বেহায়া মেয়ে ওঁকে হাসিভরা কালামুখ দেখিয়ে দিয়েছিল, একতিল লজ্জাও করেনি। বাস্তবিক, পুরুষগুলো ভাfর বোকা । মনে করলে ওঁর প্রতি ভারি অনুগ্রহ করে সে হেসে গেল— হাসতে নাকি সিকি পয়সার খরচ হয়। দাতগুলো বোধ হয় একটু ভালো দেখতে ছিল তাই একটা ছুতো করে দেখিয়ে দিয়ে গেল। কই আমাদের কাছে তো কোনো কাদম্বিনী সাত পুরুষে এমন করে হাসতে আসে না । অবলে সরলে ! সত্যি বাপু, মেয়ে জাতটাই ভালো নয়। এত ছলও জানে ! ছি ছি ! এ কবিতাও তেমনি হয়েছে। আমি যদি কাদম্বিনী হতুম তো এমন পুরুষের মুখ দেখতুম না। যে লোক চোদটা অক্ষর সামলে চলতে পারে না, তার সঙ্গে আবার প্রণয় ! এ খাতা আমি ছিড়ে ফেলব— পৃথিবীর একটা উপকার করব— কাদম্বিনীর দেমাক বাড়তে দেব না । পুরুষের বেশে হরিলে পুরুষের মন, ( এবার ) নারীবেশে কেড়ে নিয়ে যাও জীবন মরণ । এর মানে কী ! কদম্ব যেমনি আমা প্রথম দেখিলে, কেমন ক’রে ভূত্য বলে তখনি চিনিলে ! ও মা ! ও মা ! ও মা ! এ যে আমারই কথা ! এইবার বুঝেছি পোড়ারমুখী কাদম্বিনী কে ! ( হাস্য ) তাই বলি, এমন করে কাকে লিখলেন ! ও মা, কত কথাই বলেছেন । আর-একবার ভালো করে সমস্তটা পড়ি ! কিন্তু কী চমৎকার হাতের অক্ষর একেবারে যেন মুক্তো বসিয়ে গেছে । [ নীরবে পাঠ পশ্চাৎ হইতে খাত। অন্বেষণে নিমাইয়ের প্রবেশ কিন্তু ছন্দ থাকু না থাক পড়তে তো কিছুই খারাপ হয়নি । সত্যি, ছন্দ নেই বলে আরো মনের সরল ভাবটা ঠিক যেন প্রকাশ হয়েছে । আমার তো বেশ লাগছে । আমার বোধ হয় ছেলেদের প্রথম ভাঙা কথা যেমন মিষ্টি লাগে, কবিদের প্রথম ভাঙা ছন্দ তেমনি মিষ্টি লাগে ; পড়তে গেলে বুকের ভিতরটা কী একরকম করে ওঠে— বড়ো বড়ো কবিতা পড়ে এমন হয় না । মেঘনাদবধ, বৃত্রসংহার, পলাশির যুদ্ধ, সে সব যেন ইস্কুলের বষ্ট – এমন সত্যিকার না । ( খাতা বুকে চাপিয়া ) এ খাতা আমি لا ت\-20\