পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩১২ ब्रयौटण-ब्रक्रमांदलौ করিবামাত্ৰ মহেন্দ্র কোনো একটি কৃত্রিম উপায়ে আশার মুখ বন্ধ করিয়া শাসনবাক্য অঙ্কুরেই বিনাশ করিতেছিল । এমন সময় প্রতিবেশীর বাড়ির পিঞ্জরের মধ্য হইতে পোষা কোকিল কুছ কুছ করিয়া ডাকিয়া উঠিল । তখনই মহেন্দ্র এবং আশা তাহাজের মাথার উপরে দোদুল্যমান খাচার দিকে দৃষ্টিপাত করিল। তাহদের কোকিল প্রতিবেশী কোকিলের কুহুধ্বনি কখনো নীরবে সহ করে নাই, আজ সে জবাব দেয় না কেন ? আশা উৎকণ্ঠিত হইয়া কহিল, “পাখির আজ কী হইল।” মহেন্দ্র কহিল, “তোমার কণ্ঠ শুনিয়া লজ্জাবোধ করিতেছে।” আশা সাকুনয়স্বরে কহিল, "না, ঠাট্ট নয়, দেখো না উহার কী হইয়াছে।” মহেন্দ্র তখন খাচা পাড়িয়া নামাইল । খাচার আবরণ খুলিয়া দেখিল, পাখি মরিয়া গেছে । অন্নপূর্ণার যাওয়ার পর বেহার ছুটি লইয়া গিয়াছিল, পাখিকে কেহ एनरर्थ नांझे । দেখিতে দেখিতে আশার মুখ মান হইয়া গেল। তাহার আঙল চলিল না— ফুল পড়িয়া রহিল। মহেঞ্জের মনে আঘাত লাগিলেও, অকালে রসভঙ্গের আশঙ্কায় ব্যাপারটা সে হাসিয়া উড়াইবার চেষ্টা করিল। কহিল, “ভালোই হইয়াছে ; আমি ডাক্তারি করিতে যাইতাম, আর ওটা কুহুস্বরে তোমাকে জালাইয়া মারিত।” এই বলিয়া মহেন্দ্র আশাকে বাছপাশে বেষ্টন করিয়া কাছে টানিয়া লইবার চেষ্টা করিল। আশা আস্তে আস্তে আপনাকে ছাড়াইয়া লইয়া আঁচল শূন্ত করিয়া বকুলগুলা ফেলিয়া দিল । কহিল, "আর কেন। ছি ছি। তুমি শীঘ্ৰ যাও, মাকে ফিরাইয়া আনো গে ।” ఏ এমন সময় দোতলা হইতে "মহিনদা মহিনদা” রব উঠিল । “আরে কে হে, এস এস /* বলিয়া মহেন্দ্র জবাব দিল । বিহারীর সাড়া পাইয়া মফুেক্সর চিত্ত উৎফুর হইয়া উঠিল । বিবাহের পর বিহারী মাঝে মাঝে তাহাদের স্বখের বাধাস্বরূপ আসিয়াছে— আজ সেই বাধাই স্থখের পক্ষে একান্ত প্রয়োজনীয় বলিয়া বোধ হইল । আশাও বিহারীর আগমনে আরাম বোধ করিল। মাথায় কাপড় দিয়া সে তাড়াতাড়ি উঠিয়া পড়িল দেখিয়া মহেন্দ্ৰ কহিল, “যাও কোথায়। আর তো কেহ নয়, বিহারী আসিতেছে।”