পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সোনার তরী . স্বপ্নমঙ্গলের কথা অমৃতসমান, গৌড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুণ্যবান । কহিলেন হতাশ্বাস হবুচন্দ্ররাজ, *স্লেচ্ছদেশে অাছে নাকি পণ্ডিত-সমাজ, তাহাদের ডেকে আনো যে যেখানে আছে— অর্থ যদি ধরা পড়ে তাহাদের কাছে ।” কটাচুল নীলচক্ষু কপিশ-কপোল, যবন পণ্ডিত আসে, বাজে ঢাকঢোল । গায়ে কালো মোট মোট ছাটাছোট কুর্তি, গ্রীষ্মতাপে উষ্মা বাড়ে, ভারি উগ্ৰমূর্তি । ভূমিকা না করি কিছু ঘড়ি খুলি কয়— “সতেরো মিনিট মাত্র রয়েছে সময়, কথা যদি থাকে কিছু বলে চটপট ।” সভাস্থদ্ধ বলি উঠে— “হিং টিং ছট্‌ ৷” স্বপ্নমঙ্গলের কথা অমৃতসমান, গৌড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুণ্যবান । স্বপ্ন শুনি মেচ্ছমুখ রাঙা টকটকে, আগুন ছুটিতে চায় মুখে আর চোখে । হানিয়া দক্ষিণ মুষ্টি বাম করতলে “ডেকে এনে পরিহাস” রেগেমেগে বলে । ফরাসি পণ্ডিত ছিল, হাস্তোজ্জলমুখে কহিল নোয়ায়ে মাথা, হস্ত রাখি বুকে, “স্বপ্ন যাহা শুনিলাম রাজযোগ্য বটে ; হেন স্বপ্ন সকলের অদৃষ্টে না ঘটে । কিন্তু তবু স্বপ্ন ওটা করি আকুমান যদিও রাজার শিরে পেয়েছিল স্থান । "OL