পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(f tve இ. রবীন্দ্র-রচনাবলী অত্যন্ত কঠিনভাবে উহার পূর্ববর্তী সমস্ত গুণের উপরে প্রতিষ্ঠিত হইয় তাহার চরিতগানকে মুকুটিত করিয়া তুলিল । o আমাদের যাত্ৰ-কথকতায় অনেক শিক্ষা আছে, সে-শিক্ষা আমরা ত্যাগ করিতে চাই না, কিন্তু তাছার উপরে নূতন করিয়া আরো-একটি কর্তব্য শিক্ষা দিতে হইবে । দেবতা, সাধু, পিতা, গুরু, ভাই, ভূত্যের প্রতি আমাদের কী কর্তব্য, তাহাজের জন্ত কতদূর ত্যাগ করা যায়, তাহা শিখিব ; সেই সঙ্গে সাধারণের প্রতি দেশের প্রতি আমাদের কী কর্তব্য, তাহাও নূতন করিয়া আমাদিগকে গান করিতে হইবে,— ইহাতে কি কোনো পক্ষের বিশেষ শঙ্কার কারণ কিছু আছে ? একটা প্রশ্ন উঠিয়াছে, সমুদ্রযাত্রার আমি সমর্থন করি কি না ; যদি করি তবে হিন্দুধর্মাতুগত আচারপালনের বিধি রাখিতে হইবে কি না । এ-সম্বন্ধে কথা এই, পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়া পৃথিবীর পরিচয় হইতে বিমুখ হওয়াকে আমি ধর্ম বলি না । কিন্তু বর্তমান প্রসঙ্গে এ-সমস্ত কথাকে অত্যন্ত প্রাধান্ত দেওয়া আমি অনাবশু্যক জ্ঞান করি । কারণ, আমি এ-কথা বলিতেছি না যে, আমার মতেই সমাজগঠন করিতে হইবে । আমি বলিতেছি, আত্মরক্ষার জন্য সমাজকে জাগ্রত হইতে হইবে, কতৃত্ব গ্রহণ করিতে হুইবে । সমাজ যেকোনো উপায়ে সেই কতৃত্ব লাভ করিলেই আপনার সমস্ত সমস্যার মীমাংসা আপনি করিবে । তাহার সেই স্বকৃত মীমাংসা কখন কিরূপ হইবে, আমি তাহা গণনা করিয়া বলিতে পারি না । অতএব প্রসঙ্গক্রমে আমি দু-চারিটা কথ। যাহা বলিয়াছি, অতিশয় সূক্ষ্মভাবে তাহার বিচার করিতে বসা মিথ্যা। আমি যদি স্থপ্ত জহরিকে ভাকিয়া বলি “ভাই, তোমার হীরামুক্তার দোকান সামলাও”, তখন কি সে এই কথা লইয়া আলোচনা করিবে যে, কঙ্কণ-রচনার গঠন সম্বন্ধে তাহার সঙ্গে আমার মতভেদ আছে অতএব আমার কথা কৰ্ণপাতের যোগ্য নহে। তোমার কঙ্কণ তুমি যেমন খুশি গড়িয়ে, তাহা লইয়া তোমাতে আমাতে হয়তো চিরদিন বাদপ্রতিবাদ চলিবে; কিন্তু আপাতত চোখ জল দিয়া ধুইয়া ফেলো, তোমার মণিমাণিক্যের পসরা সামলাও— দস্থ্যর সাড়া পাওয়া গেছে এবং তুমি যখন অসাড় অচেতন হইয়া দ্বার জুড়িয়া পড়িয়া আছ তখন তোমার প্রাচীন ভিত্তির পরে সি খেলের সিধকাঠি এক মুহূত বিশ্রাম করিতেছে না । 弹 *.