পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আত্মশক্তি &és সফলতার সদুপায়। প্রাইমারি শিক্ষা বাংলাদেশে যখন চার উপভাষার চালাইবার কথা হইয়াছিল তখন এই প্রবন্ধ রচিত হয়। সম্প্রতি সে সংকল্প বন্ধ হওয়াতে প্রৰন্ধের স্থানে স্থানে বাদ দেওয়া গেল । ভারতবর্ষে একচ্ছত্র ইংরেজ-রাজত্বের প্রধান কল্যাণই এই যে, তাহা ভারতবর্ষের নানাজাতিকে এক ৰুরিয়া তুলিতেছে । ইংরেজ ইচ্ছা না করিলেও এই ঐক্যসাধনপ্রক্রিয়া আপনা-আপনি কাজ করিতে থাকিবে । নদী যদি মনেও করে যে, সে দেশকে বিভক্ত করিবে, তৰু সে এক দেশের সহিত আর-এক দেশের যোগসাধন করিয়া দেয়, বাণিজ্য বহন করে, তীরে তীরে হাটবাজারের স্থষ্টি করে, যাতায়াতের পথ উন্মুক্ত না করিয়া থাকিতে পারে না। ঐক্যহীন দেশে এক বিদেশী রাজার শাসনও সেইরূপ যোগের বন্ধন । বিধাতার এই মঙ্গল-অভিপ্রায়ই ভারতবর্ষে ব্রিটিশশাসনকে মহিমা অপণ করিয়াছে । জগতের ইতিহাসে সর্বত্রই দেখা গেছে, এক পক্ষকে বঞ্চিত করিয়া অন্য পক্ষের ভালো কখনোই দীর্ঘকাল স্থায়ী হইতে পারে না। ধর্ম সামঞ্জস্তের উপর প্রতিষ্ঠিত, সেই সামঞ্জস্য নষ্ট হইলেই ধর্ম নষ্ট হয় এবং— 事 ধম এব হতে হস্তি ধমে । রক্ষতি রক্ষিতঃ । ভারতসাম্রাজ্যের দ্বারা ইংরেজ বলা হইতেছে, কিন্তু ভারতকে যদি ইংরেজ বলহীন করিতে চেষ্টা করে তবে এই এক পক্ষের সুবিধা কোনোমতেই দীর্ঘকাল স্থায়ী হইতে পারিবে না, তাহা আপনার বিপর্যয় আপনি ঘটাইবে ; নিরস্ত্র, নিঃসত্ত্ব, নিরন্ন ভারতের দুর্বলতাই ইংরেজ-সাম্রাজ্যকে বিনাশ করিবে । কিন্তু, রাষ্ট্রনীতিকে বড়ো করিয়া দেখিবার শক্তি অতি অল্প লোকের আছে । বিশেষত, লোভ যখন বেশি হয় তখন দেখিবার শক্তি আরো কমিয়া যায়। ভারতবর্ষকে চিরকালই আমাদের আয়ত্ত করিয়া রাখিব, অত্যন্ত লুদ্ধভাবে যদি কোনো রাষ্ট্রনীতিক এমন অস্বাভাৰিক কথা ধ্যান করিতে থাকেন তবে ভারতবর্ষকে দীর্ঘকাল রাখিবার উপায়গুলি তিনি নিশ্চয়ই ভুলিতে থাকেন। চিরকাল রাখা সম্ভৰই নয়, তাহা জগতের নিয়মবিরুদ্ধ— ফলকেও গাছের পরিত্যাগ করিতেই হয়— চিরদিন ৰাধিয়া-ছাদিয়া রাখিবার আয়োজন করিতে গেলে বস্তুত যতদিন রাখা সম্ভব হইত তাহাকেও হ্রস্ব করিতে হয় । | * অধীন দেশকে দুর্বল করা, তাহাকে অনৈক্যের দ্বারা ছিল্পৰিচ্ছিন্ন করা, দেশের