পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গান্ধারী । গান্ধারী । রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী পা দিয়ে বঁাচে না কেহ । বারেক যখন নেমেছে পাপের স্রোতে কুরুপুত্ৰগণ তখন ধর্মের সাথে সন্ধি করা মিছে ; পাপের দুয়ারে পাপ সহায় মাগিছে । কী করিলি হতভাগ্য, বৃদ্ধ বুদ্ধিহত, দুর্বল দ্বিধায় পড়ি ? অপমানক্ষত রাজ্য ফিরে দিলে। তবু মিলাবে না। আর পাণ্ডবের মনে— শুধু নব কাষ্ঠভার হুতাশনে দান । অপমানিতের করে ক্ষমতার অস্ত্র দেওয়া মরিবার তরে । সক্ষমে দিয়ো না ছাড়ি দিয়ে স্বল্প পীড়াকরাহ দলন । কোরো না বিফল ক্রীড়া পাপের সহিত ; যদি ডেকে আন তারে, বরণ করিয়া। তবে লাহো একেবারে ।” এইমত পাপবুদ্ধি পিতৃস্নেহরুরূপে বিধিতে লাগিল মোর কৰ্ণে চুপে চুপে কত কথা তীক্ষ সূচিসম । পুনরায় ফিরানু পাণ্ডবগণে ; দূতছলনায় বিসর্জিনু দীর্ঘ বনবাসে । হায় ধর্ম, হায় রে প্রবৃত্তিবেগ ! কে বুঝিবে মর্ম সংসারের } ধর্ম নহে সম্পদের হেতু, মহারাজ, নহে সে সুখের ক্ষুদ্র সেতুধর্মেই ধর্মের শেষ । মূঢ় নারী আমি, ধৰ্মকথা তোমারে কী বুঝাইব স্বামী, জান তো সকলই । পাণ্ডবেরা যাবে বনে, ফিরাইলে ফিরিবে না, বদ্ধ তারা পণে । এখন এ মহারাজ্য একাকী তোমার মহীপতি— পুত্ৰে তব ত্যজ এইবার ; নিম্পাপেরে দুঃখ দিয়ে নিজে পূর্ণ সুখ লাইয়ো না, ন্যায়ধর্মে কোরো না বিমুখ পৌরবপ্রাসাদ হতে- দুঃখ সুদুঃসহ দেহাে তুলি মোর শিরে । সত্য তব উপদেশ, তীব্ৰ তব বাণী । অধর্মের মধুমাখা বিষফল তুলি আনন্দে নাচিছে পুত্র ; মেহমোহে ভুলি সে ফল দিয়ে না। তারে ভোগ করিবারে ; কেড়ে লও, ফেলে দাও, কাদাও তাহারে । ছলালব্ধ পাপস্ফীত রাজ্যধনজনে