পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গান্ধারী । काश्मिी যুগাস্তের উল্কােসম দহিছে না। আজ এ মণিমঞ্জীর তোরে ? রতুললাটিকা এ যে তোর সৌভাগ্যের বাজােনলশিখা ৷ তোরে হেরি অঙ্গে মোর ত্রাসের স্পন্দন সঞ্চারিছে, চিত্তে মোর উঠিছে ক্ৰন্দনআনিছে শঙ্কিত কৰ্ণে তোর অলংকার উন্মাদিনী শংকরীর তাণ্ডবঝংকার । মাতঃ, মোরা ক্ষত্ৰনারী, দুর্ভাগ্যের ভয় নাহি করি । কভু জয়, কিন্তু পরাজয়মধ্যাহ্নগগনে কাভু, কীভু অস্তধামে, ক্ষত্ৰিয়মহিমা-সূৰ্য উঠে আর নামে । ক্ষত্ৰবীরাঙ্গনা, মাতঃ, সেই কথা স্মরি। শঙ্কার বক্ষেতে থাকি সংকটে না ডরি ক্ষণকাল । দুদিন দুর্যোেগ যদি আসে, বিমুখ ভাগ্যেরে তবে হানি উপহাসে কেমনে মরিতে হয় জানি তাহা দেবী— কেমনে বঁাচিতে হয়। শ্ৰীচরণ সেবি সে শিক্ষাও লভিয়াছি । বৎসে, অমঙ্গল একেলা তোমার নাহে । লয়ে দলবল সে যাবে মিটায় ক্ষুধা, উঠে হাহাকার, কত বীররািক্তস্রোতে কত বিধবার অশ্রুধারা পড়ে আসি- রত্ন-অলংকার বধূহস্ত হতে খসি পড়ে শত শত চুতলতাকুঞ্জবনে মঞ্জরীর মতো ঝঞাবাতে । বৎসে, ভাঙিয়ো না বদ্ধ সেতু, ক্রীড়াচ্ছলে তুলিয়ো না বিপ্লবের কেতু গৃহমাঝে— আনন্দের দিন নহে আজি । স্বজনদুর্ভাগ্য লয়ে সর্ব অঙ্গে সাজি গর্ব করিয়ো না মাতঃ ! হয়ে সুসংযত আজ হতে শুদ্ধচিত্তে উপবাসব্রত করো আচরণ- বেণী করি উন্মোচন শাস্ত মনে করো, বৎসে, দেবতা-অৰ্চন । এ পাপসৌভাগ্যদিনে গৰ্ব-অহংকারে প্রতিক্ষণে লজা দিয়ে নাকো বিধাতারে । খুলে ফেলো অলংকার, নব রক্তাম্বর ; থামাও উৎসববাদ্য, রাজ-আড়ম্বর ; অগ্নিগৃহে যাও, পুত্রী, ডাকো পুরোহিতেকালের প্রতীক্ষা করো শুদ্ধসত্ত্ব চিতে । [ভানুমতীর প্রস্থান ܠܘܬ