পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী বুদ্ধির বলে সকলই বুঝেছি, দু-একটি বাকি রয়েছে। তবু, সে ছাড়া সে কেহ বোঝে না কভু । ৯ কার্তিক ১৩০৪ ভাষা ও ছন্দ যেদিন হিমাদ্ৰিশৃঙ্গে নামি আসে আসন্ন আষাঢ়, মহানন্দ ব্ৰহ্মপুত্র অকস্মাৎ দুৰ্দাম দুর্বার দুঃসহ অন্তরবেগে তীরতরু করিয়া উন্মুল মাতিয়া খুঁজিয়া ফিরে আপনার কুল-উপকূল তাঁট-অরণ্যের তলে তরঙ্গের ডিম্বরু বাজায়ে ক্ষিপ্ত ধূর্জটির প্রায় ; সেইমত বনানীর ছায়ে স্বচ্ছ শীৰ্ণ ক্ষিপ্ৰগতি স্রোতস্বতী তমসার তীরে অপূর্ব উদবেগভরে সঙ্গীহীন ভ্ৰমিছেন ফিরে গভীর জলদমন্দ্ৰে বারম্বার আবর্তিয়া মুখে নব ছন্দ ; বেদনায় অন্তর করিয়া বিদারিত মুহুর্তে নিল যে জন্ম পরিপূর্ণ বাণীর সংগীত, তারে লয়ে কী করিবে, ভাবে মুনি কী তার উদ্দেশতরুণগরুড়সম কী মহৎক্ষুধার আবেশ পীড়ন করিছে তারে, কী তাহার দুরন্ত প্রার্থনা, আপন বিরাট নীড় - অলৌকিক আনন্দের ভার বিধাতা যাহারে দেয়, তার বক্ষে বেদনা অপাের, তার নিত্য জাগরণ ; অগ্নিসম দেবতার দান উধৰ্কশিখা জ্বালি চিত্তে অহোরাত্ৰ দগ্ধ করে। প্ৰাণ । অস্তে গেল দিনমণি । দেবর্ষি নারদ সন্ধ্যাকালে শাখাসুপ্ত পাখিদের সচকিয়া জটারশ্মিজালে, স্বগের নন্দনগন্ধে অসময়ে শ্রান্ত মধুকরে বিস্মিত ব্যাকুল করি, উত্তরিলা তপোভুমি-"পারে । নমস্কার করি কবি শুধাইলা সঁপিয়া আসন“কী মহৎ দৈবকাৰ্যে, দেব, তব মর্তে আগমন ?” নারদ কহিলা হাসি, “করুণার উৎসমুখে, মুনি, যে ছন্দ উঠিল উদ্ধেৰ্ব, ব্ৰহ্মলোকে ব্ৰহ্মা তাহা শুনি আমারে কহিলা ডাকি, যাও তুমি তমসার তীরে, বাণীর-বিদ্যুৎ-দীপ্ত ছন্দোবাণ-বিদ্ধ বাল্মীকিরে