পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S SR SR রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী ক্ষীরো । এ সংসারের ওই তো প্ৰথা, দেওয়া নেওয়া ছাড়া নেইকো কথা । * ভাত তুলে দেন মোদের মুখে, নাম তুলে নেন পরম সুখে । ভাত মুখে দিলে তখনি ফুরোয়, নাম চিরদিন কৰ্ণ জুড়োয় । চতুর্থী । ওই বউ নিয়ে ফিরে এল নেকী । বধুসহ দ্বিতীয়ার প্রবেশ প্ৰথমা । কী পেলি লো বিধু, দেখি দেখি দেখি । দ্বিতীয়া । শুধু একজোড়া রতনচক্র । তৃতীয়া । বিধি আজ তোরে বড়োই বক্ৰ । এত ঘটা করে নিয়ে গেল ডেকে, ভেবেছিনু দেবে গয়না গা ঢেকে । চতুর্থী । মেয়ের বিয়েতে পেয়ারী বুড়ি পেয়েছিল হার, তা ছাড়া চুড়ি । দ্বিতীয়া । আমি যে গরিব নাই যথেষ্ট, গরিবিয়ানায় সে মাগী শ্রেষ্ঠ । অদৃষ্টে যার নেইকো গয়না গরিব হয়ে সে গরিব হয় না । চতুর্থী। বড়োমানষের বিচার তো নেই। কারেও বা তার ধরে না মনেই, কেউ বা তাহার মাথার ঠাকুর । প্ৰথমা । টাকাটা সিকেটা কুমড়ো কাঁকুড় । যা পাই সে ভালো, কে দেয় তাই বা? দ্বিতীয়া । অবিচারে দান দিলেন নাই বা । মাথা বাধা রেখে পায়ের নীচে ভরি-কত সোনা পেলেম মিছে । ক্ষীরো । মা লক্ষ্মী যদি হতেন সদয় দেখিয়ে দিতেম দান করে কয় । দ্বিতীয়া । আহা তাই হােক, লক্ষ্মীর বরে তোর ঘরে যেন টাকা নাহি ধরে । প্ৰথমা । ওলো থাম তোরা, রাখি। বকুনি— রানীর পায়ের শব্দ শুনি । উচ্চৈঃস্বরে চতুর্থী । আহা, জননীর অসীম দয়া, ভগবতী যেন কমলালয়া । দ্বিতীয়া । হেন নারী আর হয় নি সৃষ্টি, সবা-“পরে তার সমান দৃষ্টি । তৃতীয়া । আহা মরি, তারি হস্তে আসি সার্থক হল অর্থরাশি ।