পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y \ეხr রবীন্দ্র-রচনাবলী নরহরি। ওদের সঙ্গে এমন কথা কওয়া উচিত যাতে ওদের আমোদ এবং শিক্ষা দুই হয়। আচ্ছা! হরিদাস, তোমার নামের সমাস কী বলে দেখি | হরিদাস । আমি চমা কব । মা ! দেখো দেখি বাছা, ওকে এ-সব কথা জিগেস কর কেন ? ও কী জানে ! নরহরি । না, ওকে এই বেলা থেকে এইরকম করে অল্পে অল্পে মুখস্থ করিয়ে দেব | মা । (ছেলে তুলিয়া লইয়া) না বাবা, কােজ নেই তোমার আদর করে। নরহরি মাথায় হাত দিয়া পুনশ্চ চিন্তায় মগ্ন (কাতর হইয়া) বাবা, আমায় কাশী পাঠিয়ে দে, আমি কাশীবাসী হব। নরহরি | তা যাও-না মা ! তোমার ইচ্ছে হয়েছে, আমি বাধা দেব না । মা ! (স্বগত) নিরু আমার সকল কথাতেই ভেবে অস্থির হয়ে পড়ে, এটাতে বড়ো বেশি ভাবতে হল না । (প্রকাশ্যে) তা হলে তো আমাকে মাসে মাসে কিছু টাকার বন্দােবস্ত করে দিতে হবে। নরহরি। সত্যি নাকি ? তা হলে আমাকে আর কিছুদিন ধরে ভাবতে হবে । এ কথা নিতান্ত সহজ নয় । আমি এক হস্তপ্ত ভেবে পরে বলব । মা । (ব্যস্ত হইয়া) না বাবা, তোমার আর ভাবতে হবে না— আমার কাশী গিয়ে কাজ নেই। আশ্বিন-কার্তিক ১২৯২ ভাব ও অভাব কবিবর কুঞ্জবিহারীবাবু ও বশম্বন্দবাবু কুঞ্জবিহারী। কী অভিপ্ৰায়ে আগমন ? বশম্বদ । আজ্ঞে, আর তো অন্ন জোটে না ; মশায় সেই- যে কাজেরকুঞ্জবিহারী । (ব্যস্তসমস্ত হইয়া) কাজ ? কাজ আবার কিসের ? আজ এই সুমধুর শরৎকালে কাজের কথা কে বলে ? বশম্বদ । আজ্ঞে, ইচ্ছে করে কেউ বলে না, পেটের জ্বালায়কুঞ্জবিহারী। পেটের জ্বালা ? ছিছি, ওটা অতি হীন কথা— ও কথা আর বলবেন না। বশম্বদ । যে আজ্ঞে, আর বলব না। কিন্তু ওটা সর্বদাই মনে পড়ে। কুঞ্জবিহারী। বলেন কী বশম্বন্দবাবু, সর্বদাই মনে পড়ে ? এমন প্রশান্ত নিস্তব্ধ সুন্দর সন্ধ্যাবেলাতেওঁ মনে পড়ছে ? বশম্বদ । আজ্ঞে, পড়ছে বৈকি। এখন আরো বেশি মনে পড়ছে। সেই সাড়ে-দশটা বেলায় দুটি ভাত মুখে গুজে উমেদারি করতে বের হয়েছিলুম, তার পরে তো আর খাওয়া হয় নি । কুঞ্জবিহারী। তা নাই হল। খাওয়া নাই হল। বশম্বন্দবাবুর নীরবে মাথা-চুলকন এই শরতের জ্যোৎস্নায় কি মনে হয় না যে, মানুষ যেন পশুর মতো কতকগুলো আহার না করেওঁ বেঁচে থাকে ! যেন কেবল এই চাদের আলো, ফুলের মধু, বসন্তের বাতাস খেয়েই জীবন বেশ চলে शीश ! বশম্বদ। (সভয়ে মৃদুস্বরে) আজ্ঞে, জীবন বেশ চলে যায় সত্যি, কিন্তু জীবন রক্ষে হয় না— আরো -سیسنگ -a-f-f Frr-orpor of