পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sa o রবীন্দ্র-রচনাবলী ভূত্যের প্রবেশ ভৃত্য। খাবার এসেছে। কুঞ্জবিহারী। দেরি করলি কেন ? খাবার আনতে দু-ঘণ্টা লাগে বুঝি ? उ&शश°ों & २०२ রোগীর বন্ধু রেলগাড়িতে দুঃখীরাম ও বৈদ্যনাথবাবু বৈদ্যনাথ । (মাথায় হাত দিয়া) উ-উ-উঃ ! দুঃখীরাম। (দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া) হা—হাঃ ! কাতরভাবে বৈদ্যনাথের প্রতি নিরীক্ষণ বৈদ্যনাথ। (দুঃখীরামের মনােযোগ দেখিয়া) দেখছেন তো মশায়, ব্যামাের কষ্টটা তো দেখছেন! দুঃখীরাম। না, আমি তা দেখছি নে। আপনাকে দেখে আমার পুনর্বাের ভ্রাতৃশোক উপস্থিত হচ্ছে। श शé ! নিশ্বাস বৈদ্যনাথ । সে কী কথা ! দুঃখীরাম। ই মশায় ! মরবার সময় তার ঠিক আপনার মতো চেহারা হয়ে এসেছিল— বৈদ্যনাথ । (শশব্যস্ত হইয়া) বলেন কী ! দুঃখীরাম। যথার্থ কথা । ঐরকম তার চােখ বসে গিয়েছিল, গালের মাংস ঝুলে পড়েছিল, হাত-পা সরু হয়ে গিয়েছিল, ঠোঁট সাদী, মুখের চামড়া হলদে।-- বৈদ্যনাথ । (আকুলভাবে) বলেন কী মশায়! আমার কি তবে এমন দশা হয়েছে ? এ কথা আমাকে তো কেউ বলে নি— দুঃখীরাম। কেনই বা বলবে ? এ সংসারে প্রকৃত বন্ধু কেই বা আছে ? দীর্ঘনিশ্বাস বৈদ্যনাথ । ডাক্তার তো আমাকে বার বার বলেছে আমার কোনো ভাবনার কারণ নেই | দুঃখীরাম। ডাক্তার ? ডাক্তারের কথা। আপনি এক তিল বিশ্বাস করেন ? ডাক্তারকে বিশ্বাস করেই কি আমরা অকুল পাথরে পড়ি নি ? যখন আসন্ন বিপদ সেই সময়েই তারা বেশি করে আশ্বাস দেয়, অবশেষে যখন রোগীর হাতে-পায়ে খিল ধরে আসে, তার চোখ উলটে যায়, তার গা-হাত-পা হিম হয়ে আসে, তার বৈদ্যনাথ । (দুঃখীরামের হাত ধরিয়া) ক্ষমা করুন মশায়, আর বলবেন না মশায়! আমার গা-হাত-পা হিম হয়েই এসেছে । আপনার বর্ণনা সদ্যসদ্যই খেটে যাবে । (বুকে হাত দিয়া) উ উ উঃ ! দুঃখীরাম। দেখেছেন মশায় ? আমি তো বলেইছি— ডাক্তারের আশ্বাসবাক্যে কিছুমাত্র বিশ্বাস করবেন না। আচ্ছা, একটা কথা আপনাকে জিজ্ঞাসা করি— আপনি কি রাত্রে চিত হয়ে শোন ? বৈদ্যনাথ । হা, চিত হয়ে না। শুলে আমার ঘুম হয় না। দুঃখীরাম। (নিশ্বাস ফেলিয়া) আমার ভায়েরও ঠিক ঐ দশা হয়েছিল। সে একেবারেই পাশ