পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sbrbr রবীন্দ্র-রচনাবলী গণেশের প্রবেশ গণেশ । লেখাটা তো শেষ করেছি, এখন শোনাই কাকে ? খাতা হাতে যেখানেই যাই কাউকে দেখতে পাই নে । আজ কাউকে শোনাতেই হবে- সন্ধান দেখি গে । দ্বিতীয় দৃশ্য হরিচরণ নবীনামাধব নরোত্তম হরিচরণ । ওহে, এতদিন ছিলেম ভালো, কোনো আপদ ছিল না। এখন কী করা যায়। নবীন । তাই তো, কী করা যায় ! নরোত্তম । তাই তো হে, উপায় কী ! হরিচরণ | এতদিন আমাদের বাসায় আপদের মধ্যে নবকান্ত ছিল, তাকে সয়ে গিয়েছিল, এখন কোথা থেকে একটা লেখক এসেছে । নরোত্তম । বাসায় লেখক থাকা কাজের কথা নয় | নবীন । কাল জাতিভেদের উপর এক কবিতা লিখে শোনাতে এসেছিল । হরিচরণ । কাল রাত্রি সাড়ে-দশটা, সবে আমার একটু তন্দ্ৰা এসেছে, এমন সময় লেখক এসে উপস্থিত। তন্দ্ৰা তো ছুটলই, আমিও তার পশ্চাৎ পশ্চাৎ ছুটিলুম। নরোত্তম । আরে ভাই, আমাকেও— ঐ আসছে ! হরিচরণ । ঐ এল রে ! নবীন । ঐ খাতা ! হরিচরণ | পালাই ! নবীন। আমিও পালাই ! নরোত্তম । আমি মোটা মানুষ ছুটতে পারব না, করি কী ! গণেশের প্রবেশ গণেশ । তিনটে প্ৰবন্ধ নরোত্তম । কটা বাজল কে জানে ! গণেশ । একটা হচ্ছে আধুনিক স্ত্রীজাতির নরোত্তম । মশায়, ঘড়ি আছে ? দেখুন তো সময় গণেশ । আজ্ঞে, ঘড়ি নেই। আমার প্রবন্ধের একটা হচ্ছে নরোত্তম । (উচ্চস্বরে) ওরে মোধো, আপিসের চাপকানটা কোথায় রাখলি ? গণেশ । বুঝেছেন নরোত্তমবাবু, একটা প্ৰবন্ধ হিন্দুধর্মের নরোত্তম । (নেপথ্যে চাহিয়া) ঐ ঐ, ঐ সর্বনাশ হল ! ছেলেটা প’ল বুঝি ! [প্ৰস্থান গণেশ। কাল থেকে চেষ্টা করছি, কাউকে পাচ্ছি নে। কে যেন কাকের বাসায় ঢ়িল ছুড়েছেবাসাসুদ্ধ প্রাণী চঞ্চল হয়ে বেড়াচ্ছে। পূর্বে যে বাসায় ছিলুম। সেখানে একটি লোকও বাকি রইল না, কাজেই ছেড়ে আসতে হল। এখানেই বা এরা দু দণ্ড স্থির হয়ে বসতে পারে না কেন ! যাই। নরোত্তমবাবুকে ধরি গে। লোকটি বেশ মোটাসোটা ভালোমানুষ।