পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈতালি বিলয় যেন তাঁর আঁখি দুটি নবনীল ভাসে ফুটিয়া উঠিছে আজি অসীম আকাশে । বৃষ্টিধৌত প্ৰভাতের আলোকহিল্লোলে অশ্রুমাখা হাসি তার বিকশিয়া তোলে । তার সেই মেহলীলা সহস্ৰ আকারে সমস্ত জগৎ হতে ঘিরিছে আমারে । বরষার নদী-’পরে ছলছল আলো, দূরতীরে কাননের ছায়া কালো কালো, দিগন্তের শ্যামপ্রান্তে শান্ত মেঘরাজি— তারি মুখখানি যেন শতরূপ সাজি । আঁখি তার কহে যেন মোর মুখে চাহি— “আজ প্ৰাতে সব পাখি উঠিয়াছে গাঁহি, শুধু মোর কণ্ঠস্বর এ প্রভাতবায়ে অনন্ত জগৎমাঝে গিয়েছে হারায়ে ।” q Ke » Oo\S) প্রথম চুম্বন স্তব্ধ হল দশ দিক নত করি আঁখিবন্ধ করি দিল গান যত ছিল পাখি । শাস্ত হয়ে গেল বায়ু, জলকলম্বর মুহূর্তে থামিয়া গেল, বনের মর্মর বনের মর্মের মাঝে মিলাইল ধীরে । নিঃশব্দে নামিল আসি সায়াহ্নচ্ছায়ায় নিস্তব্ধ গগনপ্রান্ত নির্বক ধরায় । সেইক্ষণে বাতায়নে নীরব নির্জন আমাদের দুজনের প্রথম চুম্বন । দিক-দিগন্তরে বাজি উঠিল তখনি দেবালয়ে আরতির শঙ্খ ঘণ্টাধ্বনি । অনন্ত নক্ষত্ৰলোক উঠিল। শিহরি, আমাদের চক্ষে এল অশ্রািজল ভরি । So Re Soovo শেষ চুম্বন দূর স্বর্গে বাজে যেন নীরব ভৈরবী । উষার করুণ চাদ শীর্ণমুখচ্ছবি। স্নান হয়ে এল। তারা ; পূর্বদিগবন্ধুর কপোল শিশিরসিক্ত, পাণ্ডুর, বিধুর।