পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>ミ8 রবীন্দ্র-রচনাবলী পঞ্চকের প্রবেশ পঞ্চক । গান তুমি ডাক দিয়েছ কোন সকালে কেউ তা জানে না। আমার মন যে কাদে আপন মনে কেউ তা মানে না । ওরে ভাই, কে আছিস ভাই । কাকে ডেকে বলব, গুরু আসছেন। সঞ্জীবের প্রবেশ সঞ্জীব । তাই তো শুনেছি। কিন্তু কে এসে খবর দিলে বলে তো । পঞ্চক। কে দিলে তা তো কেউ বলে না । সঞ্জীব । কিন্তু গুরু আসছেন বলে তুমি তো তৈরি হচ্ছ না, পঞ্চক ? পঞ্চক । বাঃ, সেইজন্যেই তো পুথিপত্র সব ফেলে দিয়েছি। সঞ্জীব । সেই বুঝি তোমার তৈরি হওয়া ? পঞ্চক । আরে, গুরু যখন না থাকেন তখনই পুথিপত্র। গুরু যখন আসবেন তখন ওই সব জঞ্জাল সরিয়ে দিয়ে সময় খোলস করতে হবে । আমি সেই পুথি বন্ধ করবার কাজে ভয়ানক ব্যস্ত । সঞ্জীব । তাই তো দেখছি । [ প্রস্থান পঞ্চক। গান _ ফিরি আমি উদাস প্রাণে, তাকাই সবার মুখের পানে, তোমার মতো এমন টানে কেউ তো টানে না । ওহে জয়োত্তম, তুমি কাধে কিসের বোঝা নিয়ে চলেছ ? বোঝা ফেলো । গুরু আসছেন যে । জয়োত্তম । আরে ছুয়ো না, এ-সব মাঙ্গল্য । গুরুর জন্যে সিংহদ্বার সাজাতে চলেছি। পঞ্চক। গুরু কোন দ্বার দিয়ে ঢুকবেন তা জানবে কী করে ? জয়োত্তম । তা তো বটেই। অচলায়তনে জানবার লোক কেবল তুমিই আছ। পঞ্চক। তোমরাও জান না আমিও জানি নে—তফাতটা এই যে, তোমরা বোঝা বয়ে মর, আমি হালকা হয়ে বসে আছি । জয়োত্তম । আচ্ছা, এখন পথ ছাড়ো, আমার সময় নেই। [ প্রস্থান পঞ্চক । গান বেজে ওঠে পঞ্চমে স্বর, কেঁপে ওঠে বন্ধ এ ঘর, বাহির হতে দুয়ারে কর কেউ তো হানে না ।