পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী একে একে তিনটি মেয়ের পরে শৈল্যধন জন্মাল তার বাপের ঘরে, জননী তার লজ্জা পেল ; ভাবল কোথা থেকে অবাঞ্ছিত কাঙালটারে আনল ঘরে ডেকে । বিনা-দোষের অপরাধে শৈলবালার জীবন হল শুরু, পদে পদে অপরাধের বোঝা হল গুরু । কারণ বিনা যে-অনাদর আপনি ওঠে জেগে বেড়েই চলে সে যে আপন বেগে । মা তারে কয় “পোড়ারমুখী”, শাসন করে বাপ,— এ কোন অভিশাপ হতভাগী আনলি বয়ে—শুধু কেবল বেঁচে-থাকার পাপ । যতই তারা দিত ওরে গালি নির্মলারে দেখত মলিন মাগিয়ে তারে আপন কথার কালি । নিজের মনের বিকারটিরেই শৈল ওরা কয়, ওদের শৈল বিধির শৈল নয় । আমি বৃদ্ধ ছিন্তু ওদের প্রতিবেশী । পাড়ায় কেবল আমার সঙ্গে দুই মেয়ের ছিল মেশামেশি। “দাদা” বলে গল| আমার জড়িয়ে ধরে বসত আমার কোলে । নাম শুধালে শৈল আমায় বলত হাসি হাসি-— “আমার নাম যে দুষ্ট, সর্বনাশী !” যখন তারে শুধাতেম তার মুখটি তুলে ধরে “আমি কে তোর বল দেখি ভাই মোরে ?” বলত "দাদা, তুই যে আমার বর ”— এমনি করে হাসাহালি হত পরম্পর ।