পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গুরু Ꮌ8Ꮔ وليا দর্ভকপল্লী পঞ্চক ও দর্ভকদল পঞ্চক । নির্বাসন, আমার নির্বাসন রে । বেঁচে গেছি, বেঁচে গেছি ! প্রথম দৰ্তক । তোমাদের কী খেতে দেব ঠাকুর ? পঞ্চক। তোদের যা আছে তাই আমরা খাব । দ্বিতীয় দৰ্ভক। আমাদের খাবার ? সে কি হয় ? সে যে সব ছোওয়া হয়ে গেছে । পঞ্চক । সেজন্যে ভাবিস নে ভাই । পেটের থিদে যে আগুন, সে কারও ছোয়া মানে না, সবই পবিত্র করে। ওরে তোরা সকালবেলায় করিস কী বল তো । ষড়ক্ষরিত দিয়ে একবার ঘটশুদ্ধি করে নিবি নে ? তৃতীয় দৰ্ভক। ঠাকুর, আমরা নীচ দর্ভক জাত—আমরা ও-সব কিছুই জানি নে । আজ কত পুরুষ ধরে এখানে বাস করে আসছি কোনোদিন তো তোমাদের পায়ের ধুলো পড়ে নি। আজ তোমাদের মন্ত্র পড়ে আমাদের বাপ-পিতামহকে উদ্ধার করে দাও ঠাকুর। পঞ্চক । সর্বনাশ । বলিস কী । এখানেও মন্ত্র পড়তে হবে । তাহলে নির্বাসনের দরকার কী ছিল । তা, সকালবেলা তোরা কী করিস বল তো ? প্রথম দৰ্তক । আমরা শাস্ত্র জানি নে, আমরা নাম গান করি । পঞ্চক । সে কী রকম ব্যাপার ? শোনা দেখি একটা । দ্বিতীয় দৰ্ভক। ঠাকুর, সে তুমি শুনে হাসবে। পঞ্চক । আমিই তো ভাই এতদিন লোক হাসিয়ে আসছি—তোরা আমাকেও হাসাবি—শুনেও মন খুশি হয়। কিছু ভাবিস নে—নিৰ্ভয়ে শুনিয়ে দে । প্রথম দৰ্ভক । আচ্ছা ভাই আয় তবে—গান ধর । গান ও অকুলের কুল, ও অগতির গতি, ও অনাথের নাথ, ও পতিতের পতি । ও নয়নের আলো, ও রসনার মধু, ও রতনের হার, ও পরানের বঁধু। ও অপরূপ রূপ, ও মনোহর কথা, ও চরমের সুখ, ও মরমের ব্যথা ।