পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>8b" রবীন্দ্র-রচনাবলী ও ভিখারির ধন, ও অবোলার বোল— ও জনমের দোলা, ও মরণের কোল । পঞ্চক। দে ভাই, আমার মন্ত্রতন্ত্র সব ভুলিয়ে দে, আমার বিদ্যাসাধ্যি সব কেড়ে নে, দে আমাকে তোদের ওই গান শিখিয়ে দে ! । আচার্যের প্রবেশ প্রথম দৰ্তক। বাবাঠাকুর, আমাদের সমস্ত পাড়া আজ ত্রাণ পেয়ে গেল। এতদিন তোমার চরণধুলো ত এখানে পড়ে নি। আচার্য। সে আমার অভাগ্য, সে আমারই অভাগ্য । দ্বিতীয় দৰ্ভক । বাবা, তোমার মানের জল কাকে দিয়ে তোলাব ? এখানে তো— আচার্য। বাবা, তোরাই তুলে আনবি । প্রথম দৰ্ভক। আমরা তুলে আনব—সে কী হয়। আচার্য । ই বাবা, তোদের তোলা জলে আজ আমার অভিষেক হবে। দ্বিতীয় দৰ্ভক। ওরে চল তবে ভাই চল। আমাদের পাটল নদী থেকে জল আনি গে । [ দর্ভকদলের প্রস্থান পঞ্চক । মনে হচ্ছে যেন ভিজে মাটির গন্ধ পাচ্ছি, কোথায় যেন বর্ষা নেমেছে। আচার্য। ওই পঞ্চক শুনতে পাচ্ছ কি ? পঞ্চক। কী বলুন দেখি ? আচার্য । আমার মনে হচ্ছে যেন সুভদ্ৰ কঁদিছে। পঞ্চক । এখান থেকে কি শোনা যাবে ? এ বোধ হয় আর কোনো শব্দ । আচার্য। তা হবে পঞ্চক, আমি তার কান্না আমার বুকের মধ্যে করে এনেছি। তার কান্নাটা এমন করে আমাকে বেজেছে কেন জান ? সে যে কান্না রাখতে পারে না তবু কিছুতে মানতে চায় না সে কাদছে । পঞ্চক। এতক্ষণে ওরা তাকে মহাতামসে বসিয়েছে—আর সকলে মিলে খুব দূরে থেকে বাহবা দিয়ে বলছে সুভদ্র দেবশিশু । আর কিছু না, আমি যদি রাজা হুতুম তা হলে ওদের সবাইকে কানে ধরে দেবতা করে দিতুম—কিছুতে ছাড়তুম না । আচার্য। ওরা ওদের দেবতাকে কাদাচ্ছে পঞ্চক। সেই দেবতারই কান্নায় এ রাজ্যের সকল আকাশ আকুল হয়ে উঠেছে। তবু ওদের পাষাণের বেড়া এখনও শতধা বিদীর্ণ হয়ে গেল না । দর্ভকদলের প্রবেশ পঞ্চক। কী ভাই, তোরা এত ব্যস্ত কিসের ?