পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী যাব যাব যাব, দিদি, অধিক দেরি নাই, তিন-সত্যি আছে তোমার, সে-কথা কি ভুলতে পারি ভাই আরো একটি চিহ্ন তাহার রেখে গেছে ঘরে খবর পেলেম পরে । গালিয়ে বুকের ব্যথা লিখে রাখি এইখানে সেই কথা । দিনের পরে দিন চলে যায়, ওদের বাড়ি যাই নে আমি আর নিয়ে আপন একলা প্রাণের ভার আপন মনে থাকি অণপন কোণে । হেনকালে একদা মোর ঘরে সন্ধ্যাবেলায় বাপ এল তার কিসের তরে । বললে, “খুড়ো একটা কথা আছে, বলি তোমার কাছে । শৈল যখন ছোটো ছিল, একদা মোর বাক্স খুলে দেপি হিসাব-লেখা খাতার পরে এ কী হিজিবিজি কালির আঁচড় । মাথায় যেন পড়ল ক্রোধের বাজ । বোঝা গেল শৈলরি এ কাজ । মারা-ধর গালিমন্দ কিছুতে তার হয় না কোনো ফল,— হঠাৎ তখন মনে এল শাস্তির কৌশল । মানা করে দিলেম তারে তোমার বাড়ি যাওয়া একেবারে । সবার চেয়ে কঠিন দণ্ড ! চুপ করে সে রইল বাক্যহীন বিদ্রোহিণী বিষম ক্রোধে । অবশেষে বারে দিনের দিন গরবিনী গর্ব ভেঙে বললে এসে, “আমি আর কখনো করব না দুষ্টামি ।’ আঁচড়-কাটা সেই হিসাবের খাতা, সেই কথানা পাতা আজকে আমার মুপের পানে চেয়ে আছে তারি চোখের মতে ।