পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৯২ রবীন্দ্র-রচনাবলী সুবর্ণ ও রাজা বিক্রমবাহুর প্রবেশ সুবর্ণ। এ কী কাগু করেছ রাজা বিক্রমবাহু ? বিক্রম। আমি কেবল এই প্রাসাদের কাছটাতেই আগুন ধরাতে চেয়েছিলুম, সে আগুন ষে এত শীঘ্র এমন চারিদিকে ধরে উঠবে সে আমি মনেও করি নি। এ বাগান থেকে বেরোবার পথ কোথায় শীঘ্র বলে দাও । C সুবর্ণ। পথ কোথায় আমি তো কিছুই জানি নে । যারা আমাদের এখানে এনেছিল তাদের একজনকেও দেখছি নে । বিক্রম। তুমি তো এদেশেরই লোক—পথ নিশ্চয় জান । Go সুবর্ণ। অন্তঃপুরের বাগানে কোনোদিনই প্রবেশ করি নি । বিক্রম। সে আমি বুঝি নে, তোমাকে পথ বলতেই হবে, নইলে তোমাকে দু-টুকরো করে কেটে ফেলব । সুবর্ণ। তাতে প্রাণ বেরোবে, পথ বেরোবার কোনো উপায় হবে না । বিক্রম। তবে কেন বলে বেড়াচ্ছিলে তুমিই এখানকার রাজা ? সুবর্ণ। আমি রাজা না, রাজা না । ( মাটিতে পড়িয়া জোড় করে ) কোথায় আমার রাজা, রক্ষা করে । আমি পাপিষ্ঠ, আমাকে রক্ষা করে । আমি বিদ্রোহী, আমাকে দণ্ড দাও, কিন্তু রক্ষা করে । বিক্রম। অমন শূন্ততার কাছে চীংকার করে লাভ কী ? ততক্ষণ পথ বের করবার চেষ্টা করা যাক । সুবর্ণ। আমি এইখানেই পড়ে রইলুম—আমার যা হবার তাই হবে । বিক্রম। সে হবে না । পুড়ে মরি তো একলা মরব না—তোমাকে সঙ্গী নেব । নেপথ্য হইতে । রক্ষা করো, রক্ষা করে । চারিদিকে আগুন । বিক্রম। মূঢ় ওঠে, আর দেরি না । সুদৰ্শনার প্রবেশ সুদৰ্শন । রাজা, রক্ষা করে । আগুনে ঘিরেছে। সুবর্ণ। কোথায় রাজা ? আমি রাজা নই। সুদৰ্শন । তুমি রাজা নও ? সুবর্ণ। আমি ভণ্ড, আমি পাষণ্ড ! ( মুকুট মাটিতে ফেলিয়া ) আমার ছলনা ধূলিসাং হ’ক । [ রাজা বিক্রমের সহিত প্রস্থান