পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>おや রবীন্দ্র-রচনাবলী প্রথম । আমাদের এ হল যেন কলির রামায়ণ । কোথা থেকে ঘরে ঢুকে পড়ল দশমুণ্ড রাবণ, আচমক লঙ্কাকাও বাধিয়ে দিল । তৃতীয় । যুদ্ধের হাওয়া তো চলছে, এদিকে রাজকন্ত যে কোথায় অদর্শন হয়েছেন কেউ খোজ পায় না। মহারাজ তো বন্দী, এদিকে কে যে লড়াই চালাচ্ছে তারও কোনো ঠিকানা নেই। দ্বিতীয় । কিন্তু আমি ভাবছি, এখন আমাদের উপায় কী ? আমাদের ছিল এক রাজা এখন সাতটা হতে চলল, বেদে পুরাণে কোথাও তো এর তুলনা মেলে না । প্রথম । মেলে বই কি—পঞ্চপাণ্ডবের কথা ভেবে দেখো । তৃতীয় । আরে সে হল পঞ্চপতি— প্রথম । একই কথা । তারা হল পতি, এরা হল নৃপতি । কোনোটারই বাড়াবাড়ি সুবিধে নয় । তৃতীয়। আমাদের পাঁচকড়ি একেবারে বেদব্যাস হয়ে উঠল হে—রামায়ণ মহাভারত ছাড়া কথাই কয় না । দ্বিতীয় । তোরা তো রামায়ণ মহাভারত নিয়ে পথের মধ্যে আসর জমিয়েছিস, এদিকে আমাদের নিজের কুরুক্ষেত্রে কী ঘটছে খবর কেউ রাখিস নে । প্রথম । ওরে বাবা—সেখানে যাবে কে ? খবর যখন আসবে তখন ঘাড়ের উপর এসে আপনি পড়বে—জানতে বাকি থাকবে না । দ্বিতীয় । ভয় কিসের রে ? প্রথম। তা তো সত্যি । তুমি যাও না । তৃতীয় । আচ্ছা, চলো না ধনঞ্জয়ের ওখানে । সে সব খবর জানে । দ্বিতীয় । না জানলেও বানিয়ে দিতে জানে । [ সকলের প্রস্থান সুদৰ্শনা ও সুরঙ্গমার প্রবেশ সুদৰ্শন। একদিন আমাকে সকলে সৌভাগ্যবতী বলত, আমি যেখানে যেভূম সেখানেই ঐশ্বর্ষের আলো জলে উঠত। আজ আমি এ কী অকল্যাণ সঙ্গে করে এনেছি। তাই আমি ঘর ছেড়ে পথে এলুম। সুরঙ্গমা। মা, যতক্ষণ না সেই রাজার ঘরে পৌছোবে ততক্ষণ তো পথই বন্ধু। সুদৰ্শন। চুপ কর, চুপ কর, তার কথা আর বলিস নে । সুরঙ্গমা । তুমি যে র্তার কাছেই ফিরে যাচ্ছ । সুদৰ্শন । কখনোই না । ।